শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ধর্ম, ও ধর্মীয় সম্প্রদায় বিষয়ে আমাদের চেতনাকে সমৃদ্ধ করতে বিস্তৃতভাবে বললেনঃ
“ধর্ম্ম মানে বাঁচাবাড়ার বিজ্ঞান। যে-কোন মহাপুরুষই তার প্রবক্তা হউন না কেন, তাতে ধর্ম্মের কোন পরিবর্তন হয় না; ধর্ম্ম চিরকালই এক। হিন্দুর ধর্ম্ম যা, মুসলমানের ধর্ম্মও তাই; প্রত্যেক ধর্মমতের লোকই ঈশ্বরপন্থী। আর, সেই ঈশ্বর একজন ছাড়া দুইজন নন। তাঁর প্রেরিত বাণীবাহক যাঁরা, তাঁরাও একই সত্যের উদ্গাতা---একই পথের পথিক---নানা কলেবরে একই সত্তা।
তাই ধর্ম্ম মানুষকে মিলিত ছাড়া বিচ্ছিন্ন করে না। ধর্ম্মের থেকে চ্যুত হলেই সম্প্রদায়ে-সম্প্রদায়ে বিভেদ-বিরোধের সৃষ্টি হয়। হিন্দু যদি প্রকৃত হিন্দু হয়, মুসলমান যদি প্রকৃত মুসলমান হয়, তারা বান্ধববন্ধনে আবদ্ধ হতে বাধ্য; বাপকে যে ভালবাসে, সে কখনও ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষপরায়ণ হতে পারে না।
প্রত্যেক সম্প্রদায়ের উপাস্যই এক ও অদ্বিতীয়; তাই সম্প্রদায়গুলি ভাই-ভাই ছাড়া আর কি? মানুষের সহজ বুদ্ধিতে সবই ধরা পড়ে; গোলমাল করে দূরভিসন্ধিপ্রসূত অপব্যাখ্যা ও অপযাজন। ধর্ম্ম যদি বিপন্ন হয়ে থাকে, তবে সবচাইতে বেশী বিপন্ন হয়েছে, এমনতর অপযাজকদের হাতে। প্রত্যেক ধর্ম্মমতের আসল রূপটি তুলে ধরতে হবে সাধারণ লোকের কাছে; তাহলে দুষ্টলোকের জারীজুরি খাটবে না।
হিন্দুর যেমন হিন্দুত্বের বিকৃতি বরদাস্ত করা উচিত নয়, তেমনি উচিত নয় ইসলামের বিকৃতি বরদাস্ত করা। মুসলমানেরও তেমনি উচিত নয় ইসলাম ও হিন্দুত্বের আদর্শকে ক্ষুণ্ণ হতে দেওয়া। কোন ধর্ম্মাদর্শকে ক্ষুণ্ণ হতে দেওয়া মানে শয়তানের সাগরেদি করা।
আমাদের নিজেদের যেমন ধর্ম্মপরায়ণ হয়ে উঠতে হবে---পরিবেশকেও তেমনি ধর্ম্মপরায়ণ করে তুলতে হবে---প্রত্যেককে তার বৈশিষ্ট্য ও ধর্ম্মাদর্শ অনুযায়ী। হিন্দু যেমন গীতা পড়বে, তেমনি কোরাণ-বাইবেলও পড়বে; মুসলমান যেমন কোরাণ পড়বে, তেমনি গীতা বাইবেলও পড়বে। প্রত্যকে চেষ্টা করবে বাস্তব আচরণে স্বধর্মনিষ্ঠ হতে এবং অন্যকেও সাহায্য করবে ও প্রেরণা জোগাবে অমনতর হয়ে উঠতে।
এমনতর হতে থাকলে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্দ্য গড়ে তুলতে কদিন লাগে? আমি তো বুঝি, হিন্দুত্বের প্রতিষ্ঠা যেমন আমার দায়, ইসলাম ও খ্রীষ্টধর্ম প্রভৃতির প্রতিষ্ঠাও তেমনি আমারই দায়। আমার পরিবেশের প্রত্যেকে তার মত করে যদি ঈশ্বরপরায়ণ না হয়ে ওঠে, আদর্শপ্রেমী না হয়ে ওঠে, ধর্ম্মনিষ্ঠ না হয়ে ওঠে, তাহলে তো আমারই সমূহ বিপদ। পরিবেশকে বাদ দিয়ে আমার ধর্ম্ম করা অর্থাৎ বাঁচাবাড়ার পথে চলা তো সম্ভব নয়।”
(আ. প্র. ৯/২. ১০. ১৯৪৭)
“ধর্ম্ম মানে বাঁচাবাড়ার বিজ্ঞান। যে-কোন মহাপুরুষই তার প্রবক্তা হউন না কেন, তাতে ধর্ম্মের কোন পরিবর্তন হয় না; ধর্ম্ম চিরকালই এক। হিন্দুর ধর্ম্ম যা, মুসলমানের ধর্ম্মও তাই; প্রত্যেক ধর্মমতের লোকই ঈশ্বরপন্থী। আর, সেই ঈশ্বর একজন ছাড়া দুইজন নন। তাঁর প্রেরিত বাণীবাহক যাঁরা, তাঁরাও একই সত্যের উদ্গাতা---একই পথের পথিক---নানা কলেবরে একই সত্তা।
তাই ধর্ম্ম মানুষকে মিলিত ছাড়া বিচ্ছিন্ন করে না। ধর্ম্মের থেকে চ্যুত হলেই সম্প্রদায়ে-সম্প্রদায়ে বিভেদ-বিরোধের সৃষ্টি হয়। হিন্দু যদি প্রকৃত হিন্দু হয়, মুসলমান যদি প্রকৃত মুসলমান হয়, তারা বান্ধববন্ধনে আবদ্ধ হতে বাধ্য; বাপকে যে ভালবাসে, সে কখনও ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষপরায়ণ হতে পারে না।
প্রত্যেক সম্প্রদায়ের উপাস্যই এক ও অদ্বিতীয়; তাই সম্প্রদায়গুলি ভাই-ভাই ছাড়া আর কি? মানুষের সহজ বুদ্ধিতে সবই ধরা পড়ে; গোলমাল করে দূরভিসন্ধিপ্রসূত অপব্যাখ্যা ও অপযাজন। ধর্ম্ম যদি বিপন্ন হয়ে থাকে, তবে সবচাইতে বেশী বিপন্ন হয়েছে, এমনতর অপযাজকদের হাতে। প্রত্যেক ধর্ম্মমতের আসল রূপটি তুলে ধরতে হবে সাধারণ লোকের কাছে; তাহলে দুষ্টলোকের জারীজুরি খাটবে না।
হিন্দুর যেমন হিন্দুত্বের বিকৃতি বরদাস্ত করা উচিত নয়, তেমনি উচিত নয় ইসলামের বিকৃতি বরদাস্ত করা। মুসলমানেরও তেমনি উচিত নয় ইসলাম ও হিন্দুত্বের আদর্শকে ক্ষুণ্ণ হতে দেওয়া। কোন ধর্ম্মাদর্শকে ক্ষুণ্ণ হতে দেওয়া মানে শয়তানের সাগরেদি করা।
আমাদের নিজেদের যেমন ধর্ম্মপরায়ণ হয়ে উঠতে হবে---পরিবেশকেও তেমনি ধর্ম্মপরায়ণ করে তুলতে হবে---প্রত্যেককে তার বৈশিষ্ট্য ও ধর্ম্মাদর্শ অনুযায়ী। হিন্দু যেমন গীতা পড়বে, তেমনি কোরাণ-বাইবেলও পড়বে; মুসলমান যেমন কোরাণ পড়বে, তেমনি গীতা বাইবেলও পড়বে। প্রত্যকে চেষ্টা করবে বাস্তব আচরণে স্বধর্মনিষ্ঠ হতে এবং অন্যকেও সাহায্য করবে ও প্রেরণা জোগাবে অমনতর হয়ে উঠতে।
এমনতর হতে থাকলে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্দ্য গড়ে তুলতে কদিন লাগে? আমি তো বুঝি, হিন্দুত্বের প্রতিষ্ঠা যেমন আমার দায়, ইসলাম ও খ্রীষ্টধর্ম প্রভৃতির প্রতিষ্ঠাও তেমনি আমারই দায়। আমার পরিবেশের প্রত্যেকে তার মত করে যদি ঈশ্বরপরায়ণ না হয়ে ওঠে, আদর্শপ্রেমী না হয়ে ওঠে, ধর্ম্মনিষ্ঠ না হয়ে ওঠে, তাহলে তো আমারই সমূহ বিপদ। পরিবেশকে বাদ দিয়ে আমার ধর্ম্ম করা অর্থাৎ বাঁচাবাড়ার পথে চলা তো সম্ভব নয়।”
(আ. প্র. ৯/২. ১০. ১৯৪৭)
Post a Comment