Ads (728x90)

SRI SRI THAKUR VIDEO

Like this page

Recent Posts

World time

Add as a follower to automatically get updated Article. Jaiguru!

নারীর পরিপূর্ণতা তার মাতৃস্বরূপে।‘মা’ মানে যিনি জীবন পরিমাপ্তি করে দেন।তাই নারী জীবনের প্রধান কর্তব্যগুলির মধ্যে সন্তান পালন সর্বশ্রেষ্ঠ।গর্ভসঞ্চার কাল থেকে সন্তানের প্রাপ্ত বয়সকাল পর্যন্তনারীকে পারন করতে হয় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।তবেই একজন নারী হতে পারে সুসন্তানের জনন

নারী নিজে প্রকৃত শিক্ষিত হলে তবেই সে ছেলেমেয়েকে প্রকৃত শিক্ষিত করতে পারবে।প্রকৃত নারীরই এমনতর চরিত্রে অধিকারিণী হতে হবে যে চারিত্রিক দ্যুতি নারী জীবনকে তার বৈশিষ্ট্যের ভিতর দিয়ে সার্থকমন্ডিত করে তুলতে পারবে।অর্থাৎ আদর্শ নারী চরিত্রের অধিকারিণী হয়ে সুপুত্রের জননী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।তাইতো সাধক রামপ্রসাধের গানে আছে-‘মা হওয়া কি মুথের কথা’?

কেবল প্রসব করলেই হয়না মাতা। এ সম্বন্ধে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন,“মেয়েরা উপযুক্ত হলে তবে তো কালে তাদের সন্তান সন্ততি দ্বারা দেশের মূখ উজ্জ্বল হবে। যাদের মা শিক্ষিতা ও নীতিপরায়না হন তাদের ঘরেই বড়লোক জন্মায়”
মাতৃজঠরে প্রথম প্রাণের বিকাশ ঘটার সঙ্গে সঙ্গে এক অলিখিত নিয়মে শুরু হয় সন্তানের মানষিক গঠনের কাজ।তাই গর্ভ সঞ্চার হলেই নারীকে সাবধান হতে হয়।এই সময় থেকে ভাবী ‘মা’ কেবল শূচি সুন্দর আনন্দিতভাবে কাল যাপন করতে হবে।কারণ গর্ভাবস্থায় জননীর মানসিক অবস্থা ও বৃত্তি প্রায় সন্তানে সঞ্চরিত হতে থাকে। ভাবী সন্তানের কথা ভেবে প্রত্যেক মায়েরই উচিত গর্ভাবস্থায় প্রফুল্ল থাকা,অযথা অপরের সহিত ঝগড়া বিবাদ না করা, ভাল চিন্তা ও ভাল বই,ধর্ম গ্রন্থাদি পড়া।তাই শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছেন,-
“ঘুমিয়ে থাকা পবিত্রতা
অন্তরেরই কোলে
পুত্ররূপে জন্ম নিয়ে
উঠে প্রানন দোলে”
-ভূমিষ্ট হওয়ার পর থেকে শিশুর মনে জ্ঞানের আভা জেগে উঠে। জননীর সস্নেহ চাউনিতে তার মধ্যে কোমলতা ভাবের উদয় হয়। জননীর সাহচর্যে থেকে এর পরেই সন্তানের শিক্ষা শুরু হয়ে যায়। তাই মায়ের উপরেই সন্তানের ভিত্তি বললে ভূল হবে না।
সুস্থ সবল শিশু গড়ে তুলার দুরূহ কাজটি পিতামাতাকেই করতে হয়।সন্তানের ভবিষ্যত জীবন যাতে সুষ্ঠ সুন্দর হয়ে উঠতে পারে তার জন্য জন্মের সাথে সাথে বাবা মাকে সজাগ হতে হয়। তবে সন্তানের মঙ্গল করতে হলে নিজের চরিত্রের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। নিজেদের সুখের চিন্তা বিসর্জন দিয়ে সন্তানের সুখের জন্য আদর্শ পিতা-মাতা সর্বদা উন্মুক্ত থাকা প্রয়োজন।আজকাল বেতার টিভির মাঝে সন্তান পালন সম্মন্ধে অনেক শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান প্রচার করা হচ্ছে।তা থেকে আমাদের মায়েরা বিশেষ শিক্ষা গ্রহন করতে পারে।
(১). মায়ের উচিত পিতার প্রতি
ছেলে পিলের শ্রদ্ধানতি,
বাড়ে যাতে তেমনি করা
উছল এতেই সন্ততি।
(২).পিতার উচিত মাতৃভক্তি
অটুট থাকে সন্তানের,
ব্যবহার আচার কথায় তেমনি
পুষ্ট করাই মঙ্গলের।

প্রত্যেক পিতা-মাতারাই এমনতর চলনে চলা প্রয়োজন যাতে সন্তান তার অন্তরে মাতার কাছে থেকে পিতার প্রতি এবং পিতার কাছ থেকে মাতার প্রতি অটুট রাখার প্রেরণা পায়। যে পিতামাতার দাম্পত্য সম্পর্ক যত মধুর,সেই পিতামাতার সন্তান স্বভাবতই তত সহজ সরল ও স্বাভাবিক হয়। মায়ের অসাক্ষাতে বাবা সন্তানের কাছে মায়ের কাছে এমন কথা বলবেন যাতে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাভক্তি ভালোবাসায় সন্তান বুক ভরে যায়। আবার মার বাবার সম্মন্ধে এমন করেই সন্তান নিকট বলবেন,তাই শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছেন,“এমন করে ভালোবাসার প্লাবন যদি এনে দিতে পারো তাদের জীবন দেখবে কতো সুখী হবে,কতো সুখী হবে তোমরা, প্রত্যেক বাড়ী তখন দেব দেউল হয়ে উঠবে।”

সন্তানের সামনে মা-বাবার ঝগড়ার ফলও বিষময়।প্রথমত, ঐরূপ আচরণে মা-বাবাকে সন্তানের নিকট খেলো হতে হয়।দ্বিতীয়ত, কোন সন্তানের পিতার প্রতি বেশী টান থাকার দরুন মায়ের উপর,আবার কোন সন্তানের মায়ের প্রতি বেশী টান থাকার দরুন বাবার ইপর রাগ বা বিরক্তি জন্মাতে পারে। এটা সে সন্তানের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক তা সকলেরই বিশেষভাবে জানা প্রয়োজন।
তাই শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছেন,“পারিবারিক চালচলন যদি ঠিক না হয় ছাওয়াল পাওয়ালের পরকাল ঝরঝর হয়ে যায়”,
অন্যত্র ঠাকুর বলেছেন,
“স্বামী স্ত্রীতে ঝগড়া করে
ছেলে পুলে দেখে,
গোল্লায়েরই সদর দ্বারে
বাছাগুলোয় রাখে”
ছেলে-মেয়ের প্রথম শিক্ষার শুরু হয় মায়ের কাছে।তাই আচার, ব্যবহার, অভ্যাস নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত। সন্তান যেমন হউক না কেন মায়ের প্রতি ভালোবাসায় বা টানে তার বৃত্তি কাবু হলে তার ইন্নতি হবেই হবে। সেবা যত্ন দিয়ে আদর্শ মা সন্তানকে সবসময় রাখবেন সুখী ও তৃপ্ত। এ সম্মন্ধে শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছেন,
“জন্ম হতে পাঁচ সাত বছর
ছেলেপুলেল অন্তরেতে
প্রায়ই চলে হযে সবেগ
এরই ভিতর হযে সদ্বেগ
যেমনভাবে মাথা তুলে
তারই যেমন নিয়মনে
জানার দীপ্তি তেমন খোলে
ও বয়সে মায়ের কাছে
ছেলেপুলে থাকবে যত
মায়ের সূক্ষ্ম মম্পোষনে
সংস্কার হবে দক্ষ তত।”
শিশু স্বভাবতই কৌতুহলী। জগত ও জীবন সম্পর্কে নানা প্রম্ন তার মনে জাগছে। মায়ের নিকট এই প্রশ্নের উত্তর সে বারবার জানতে চায়। অধৈর্য মা তাকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দেন।এতে সন্তানের অনুসন্ধিৎসা একেবারেই নষ্ট হয়ে যায়।আবার আবোল তাবোল উত্তরও দিতে নেই।
অনেকের ধারণা সন্তান ছোট বয়সে যা ইচ্ছা করুক বড় হলে ঠিক হয়ে যাবে।এটা খুবই ভুল ধারনা। শিশু অবস্থায় সন্তানের মস্তিষ্ক এমন উর্বর থাকে যে, যে কোন কিছুই মস্তিষ্কে দৃঢ়ভাবে অংকিত হয়ে যায়।তাই শিশু বয়স থেকেই মা ও পরিবারের সদস্যরা নিজে আচরণ করার মধ্য দিয়া ছেলেমেয়েকে যা শিখান তাই হয় তার জীবনের মাপকাঠি। তাই শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছেন-
“আধকথার সময় হতেই
করে করিয়ে যা শিখাবি,
সেইটি হবে মোক্ষম ছেলের
হিসাবে চল নয় পস্তাবি।”
যেসব নরনারী নিজের নীতিবাক্য পালন না করে সন্তানকে নীতি বা বিধি পালন করতে বলেই কর্তব্য শেষ হলো বলে মনে করেন,তাদের খুবই ভুল হয়। কারণ নিজে নীতিবাক্য পালন না করে সন্তানকে করতে বললে শুধু বলাই সার হবে কোন ফলই ফলবে না।তাই শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছেন-
“পালন না করে নীতিবাক্য
শুনিয়ে ছেলে সামনে থেমে
এতে কিন্তু ছেলেপুলে
ইতরামিতে চলেই নেমে।”
ছেলের স্বভাব, রুচি, পছন্দ, বৈশিষ্ট্য মায়ের নখ দর্পনে থাকা উচিত।প্রত্যেকটি ছেলেকে মানুষ করা হয় তার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী। যার যেরকম প্রকৃতি তার সঙ্গে ঠিক সেইভাবে চলতে হয়। তা না হলে তাদের অন্তরের ক্ষুধা মিটে না।
ছেলের অন্যায়ে গুরুজনের কেউ শাসন করলে তার উপর বিরক্ত হতে নেই।ছেলের অন্যায়ে ছেলের পক্ষ নিলে ছেলের ভবিষ্যত নষ্ট হয়ে যায়।মায়ের সমর্থন পেলে ছেলে সহজেই কুপথে পা বাড়ায়।এসব কাজ মোটেই ভালো নয়।
সন্তান পালনের কাজটি প্রকৃতই কঠিন;তাই শ্রীশ্রীঠাকুর সমাধান করে দিয়েছেন এই উপদেশটি দিয়ে- “সবসময় লক্ষ্য রাখতে হয় ছেলেদের জীবনে যাতে কিছুতে অশ্রদ্ধা, দোষদৃষ্টি, অনৈক্য বুদ্ধি ইত্যাদি শিকড় না গেড়ে বসে।”

ছেলেমেয়েদের সামনে পরনিন্দা, পরচর্চা করা করা একেবারেই উচিত নয়।সুকেন্দ্রিক উদারতা ও সেবা সহানুভূতির দৃষ্টান্ত যেন তারা মা-বাবার চরিত্রে পায়।অত্যধিক আদর এবং অত্যধিক শাসন দুটোই সন্তানের পক্ষে ক্ষতিকর। ছেলেমেয়েদের এমনভাবে বকা উচিত নয় যাতে তাদের আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায়।খুব সহজ সরল কথায় সাধারণ ছড়ার মাধ্যমে সন্তান মানুষ করার অসাধারণ বুদ্ধিটি শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছ থেকে মায়েরা শিক্ষা নিতে পারেন। বায়না ধরার আব্দারে সন্তানকে কিভাবে বাগ
মানাতে হয় সে কথাটি ঠাকুর এ ছড়ায় বলেছেন-
“দেখো দেখো লক্ষী ছেলে
একটুও কিন্তু কাঁদেনা
এমন বলাই প্রায় ছেলেই
বায়না তেমন ধরো না”

আবার ছেলেমেয়েদের খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারেও শ্রীশ্রীঠাকুরের সজাগ উপদেশ-
“স্বাস্থ্য ক্ষিধে বুঝে তবে
ছেলেপুলের খাদ্য দিবি
ওনা হলেই জানিস সেধে
রোগের পূজায় দিন সঁপিবি।”
শৈশবকাল থেকেই ছেলেমেয়েদের কাছে মাতা ও পিতার বংশের গৌরব কাহিনী এমনতরভাবে গল্পের ভিতর দিয়া বলতে হবে যাতে ছেলেমেয়েদের মনে নিজেদের বংশ সম্মন্ধে বিশেষ শ্রদ্ধাজেগে উঠে। কারণ এর মধ্য দিয়া সন্তানের ভিতর শ্রেষ্ট বা বড় হওয়ার আকৃতি আপনি হতেই জাগ্রত হয়।প্রায়ই দেখা যায় পরিবারের বয়োজেষ্ঠ্যরা শিশুদের ঘুম পাড়াবার সময় ভূতের গল্প, রাক্ষসের গল্প প্রভৃতি বলেন। কিন্তু তা শিশুদের সাময়িক মনের খোরাক হলেও এর ফল খারাপই হয়।তাই মুনি ঋষি মহাপুরুষ ও প্রকৃত দেশপ্রেমিক এর জীবনী শিশুদের নিকট গল্পস্থলে বলা প্রয়োজন।কারণ এরূপ আলোচনা সন্তানের জীবনকে গড়া তুলার পথে অনেকখানি সহায়তা করে।
মেয়েদের মাতৃত্বকে শ্রীশ্রীঠাকুর সদা সর্বদা বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন।শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মেয়েদের মাতৃস্বরূপকে।আদর্শ জননী হয়ে উঠার পথগুলি ভারতীয় নারীদের সামনে তুলে ধরেছেন। তাই তিনি মেয়েদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন-
“প্রসব করা কঠিন যদিও
সন্তান পোষণ সহজ নয়
সন্ধিৎসা সহ বুদ্ধিমতী
দক্ষ নিপুন হতে হয়”

যথাযথ দায়িত্ব নিয়ে সন্তান পালন করতে হয়।নয়তো সন্তান পালনে নেইকো শুদ্ধি।কন্যা সন্তানকে উপযুক্ত শ্রেয় বরে এবং পুত্র সন্তানকে ইষ্টানুগ শিক্ষা দীক্ষায় যোগ্যতা সম্পন্ন করে তোলাই সন্তান পালনে প্রকৃত তাৎপর্য।
-বন্দেপুরুষত্তমম
 
Posted By DEB MUNNA (MEMBER OF SHREYO ONNEYSHA)

Post a Comment

  1. খুবই সুন্দর শিক্ষা ও দর্শন যা মানুষ হতে সাহায্য করে ঠাকুরের এই মানুষ তৈরী কারখানায় যা বর্তমান তথাকথিত শিক্ষিত সমাজের অতি প্রয়োজনীয় তথ্য সমষ্টি। 🙏🙏জয়গুরু 🙏🙏

    ReplyDelete