Ads (728x90)

SRI SRI THAKUR VIDEO

Like this page

Recent Posts

World time

Add as a follower to automatically get updated Article. Jaiguru!

আদর্শ দেশ, আদর্শ সমাজ তথা আদর্শ জাতির কথা চিন্তা করতে গেলেই আদর্শ মানেষের কথা আলোচনার  বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, জাতি গঠনের প্রধান উপাদান হচ্ছে মানুষ। আদর্শ জাতি গড়ে তুলতে হলে মানুষকে প্রথমে আদর্শবান হতে হবে। সমাজে আদর্শ মানুষের সংখ্যা যত বেশী হবে, সমাজও তত উন্নতির শিখরে অবস্থান করবে। যে সকল মানুষ আদর্শ-কেন্দ্রিক জীবন-চলনায় চ'লে নিজেদেরকে সর্বদিক দিয়ে গড়ে তোলেন তাঁদের দ্বারাই গড়ে ওঠে আদর্শ জাতি। চরিত্রবান মানেষের দ্বারাই গড়ে উঠে আদর্শ জাতি।
আমাদের ভারতবর্ষ এককালে উন্নতির চরম শিখরে অবস্থান করেছিল তখন প্রতিটি মানুষ চরিত্রে, বিদ্যাবত্তায় ও আচার-ব্যবহারে সর্বদিক দিয়ে খুব উন্নত ছিল। প্রতিটি মানুষ তখন দেব-চরিত্রের অধিকারী ছিল। ভারতবর্ষ যদিও সেই ভারতবর্ষই আছে, তথাপিও প্রাচীন ভারতবর্ষের সাথে বর্তমান ভারতের অনেক তফাৎ সৃষ্টি হয়েছে। বিজ্ঞানের যুগে নিত্য নতুন আবিষ্কারের দ্বারা দেশের নানামূখী উন্নতি হচ্ছে এ-কথা সত্য, তথাপিও আমরা দেখছি যে, বর্তমান যুগের মানুষ সবদিক দিয়ে নি:স্ব হয়ে দাড়িয়েছে।
মানেষের জীবনের মূল ভিত্তি হচ্ছে চরিত্র। আজ চরিত্রবান মানুষের সংখ্যা খুবই কমে গেছে। তারই ফলে সমাজের বুকে দেখা দিয়েছে নানা বিশৃঙ্খলা । তাই ঘুণেধরা সমাজ তথা জাতিকে বাঁচাতে হলে মানুষকে আবার জাগতে হবে, তৈরি হতে হবে। জগতকে সুন্দর করে গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে প্রতিটি মানুষকে।

সমাজের মধ্যে নারী ও পুরুষ দুটি শ্রেণী রয়েছে। আদর্শ জাতি গঠনে উভয়ের দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে দায়িত্ব কার বেশী - নারী না পুরুষের? শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বলেছেন, সুসংবদ্ধ জাতি গঠনে নারীর দায়িত্ব অপরিসীম। কারণ, নারীর গর্ভেই সব মানুষের জন্ম, নারীর হাতেই লালন-পালন, নারীর প্রেরণাপুষ্টি লাভ করেই মানুষ জগতে চলৎশীল থাকে। কন্যারুপে, ভগ্নীরুপে, স্ত্রীরুপে, মা-রূপে নারী প্রত্যেকটি মানেষের সারা জীবন ঘিরে থাকেন। তাই তো কবি সুন্দর করে বলেছেন, 'না জাগিলে ভারত ললনা এ ভারত আর জাগে না, জাগে না। 'মানুষকে প্রকৃত মানুষ করার দায়িত্ব রয়েছে এই নারী জাতির উপর।

নারী শব্দটির অর্ন্তনিহিত অর্থ হচ্ছে বৃদ্ধি পাওয়ানো। নারী-সত্তার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ধারণ করা, পোষন করা ও ফুটিয়ে তোলা। আমার মনে হয় দেশকে শ্রেষ্ঠ সন্তান উপহার দেওয়াই নারী জীবনের সাধনা। নারী যত আদর্শ চরিত্রের হবে। সমাজের বুকে দেব-চরিত্রের সন্তানের বৃদ্ধি ঘটাতে হলে রানীদের দেবী হতে হবে। শুদ্ধ, পবিত্র দেব চরিত্রের মায়েদের মধ্য দিয়ে যে সন্তান পৃথিবীতে নেমে আসবে, সেই দেব সন্তানের দ্বারাই সৃষ্টি হবে স্বর্গরাজ্য। কাজেই স্বর্গরাজ্য যদি আমরা পেতে চাই তবে আদর্শ নারীর ভূমিকা বা প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই আছে।





ভারতীয় সমাজে বহু আদর্শ ও মহীয়সী নারীর দৃষ্টান্ত রয়েছে। সীতা, সতী, সাবিত্রী, খনা, লীলাবতী, উমা প্রভৃতি বহু নারীর কথা আমরা জানি। তাঁরা নারীত্বের আদর্শ দেখিয়ে দিয়ে গেছেন। আজও তারা জগতে সকল নমস্য ও চিরস্মরণীয়া। তাঁদের শ্রেষ্ঠত্বের মূলে ছিল জীবনভর কঠোন সাধনা। সে সাধনা হচ্ছে দেবত্বের জাগরণের সাধনা। কিন্তু বর্তমান যৃগের নারীর মধ্যে সে সাধনার খুবই অভাব দেখা দিয়েছে। সাধনা করে আগে নিজেকে তৈরি করতে হবে, তারপর অপরকে  তৈরি করার শক্তি পাওয়া যাবে। 'আপনি আচরি ধর্ম. জীবেরে শিখায়', এটাই হচ্ছে মূল মন্ত্র। নিজেকে তৈরি না করে অপরকে তৈরি করা যাবে না।  সাধনার ক্ষেত্রে নানারূপ বাধা এসে দাঁড়াবে। কিন্তু এ বাধাকে অতিক্রম করে সিদ্ধিলাভ করতেই হবে। চাই গভীর বিশ্বাস, ভক্তি ও ভালবাসা, আর চাই ইষ্টের সঙ্গে জীবনকে একেবারে গেঁথে ফেলা।


জীবনকে সর্বাঙ্গসুন্দর ক'রে গ'ড়ে তুলতে হলে একজন আদর্শ পরিচালক চাই-ই। পরিচালকহীন পথিকের পক্ষে গন্তব্যস্থল খুঁজে পাওয়া কঠিন ব্যাপার। সেই পরিচালক হচ্ছেন পুরুষোত্তম - স্বয়ং ভগবান। তাঁকে জীবন - দেবতারূপে গ্রহন করে তাঁর দেওয়া অমৃতময় আশির্বাদ লাভ করে যদি সাধনা ক্ষেত্রে নামা যায়, তবে আলোর সন্ধান অবশ্যই পাওয়া যাবে। বর্তমান যুগের অস্থির প্রকৃতির মানেষের মাঝে আলোকবর্তিকা হাতে নেমে এসেছেন সেই শ্রেষ্ঠ পরিচালক পরমদয়াল শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। তিনি ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ দিশেহারা মানুষদের নির্ভয় বাণী শোনালেন।

'সৎদীক্ষা তুই এক্ষুনি নে
ইষ্টেতে রাখ সম্প্রীতি
মরণ তরণ এ নাম জপে
কাটেই অকাল যমভীতি।।'

আমরা পরম দয়ালের সন্তান। আমাদের অবশ্য করণীয় - তাঁর দেওয়া বিধিগুলি যথা যজন, যাজন, ইষ্টভৃতি ও সদাচার কাঁটায়-কাঁটায় পালন করা। ইষ্টমূখী চলনে চললে পরিবারের মধ্যে কোন গলদ জমতে পারেনা। পরিবারকে উন্নতি বা অবনতির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী প্রধানত: নারী। কথায় আছে - 'সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে।' নারীর হাতেই গড়ে ওঠে আদর্শ পরিবার। নারীই হচ্ছে জাতির বল ও ভরসা। লক্ষী মায়েদের উপরেই রয়েছে মহান জাতি গঠনের বিরাট দায়িত্ব। পরম দয়ালের আদর্শকে জীবনে ফুটিয়ে তুলে নারী যদি পরিবারকে সুন্দর ও সার্থক করে সাজিয়ে তুলতে পারে তবেই নারীর সাধনায় সিদ্ধি লাভ ঘটে। আদর্শ জাতি গঠন করার দায়িত্ব নারীদের উপর থাকার জন্য তাদের শিশুকাল থেকেই সেই সাধনায় অগ্রসর হতে হবে। নারী জীবনের বিভিন্ন পর্যায় আছে। তাদের মধ্যে কুমারী, গৃহিনী ও জননী প্রধান। এই বিভিন্ন পর্যায়গুলির মধ্য দিয়ে নারী চরিত্রের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটে। স্নেহ, মায়া, মমতা ও ভালবাসার দ্বারা পূর্ণ নারীর হৃদয়। তিনি ইচ্ছা করলেই তাঁর অন্তর্নিহিত বিভিন্ন শক্তির দ্বারা জাগিয়ে তুলতে পারেন বিশ্বকে। নারীর এই সংগঠনী শক্তিকে শ্রীশ্রীঠাকুর ছড়ার আকারে বলেছেন,

'নারী হতে জন্মে জাতি
বৃদ্ধিলভে সমষ্টিকে ।
নারী আনে বৃদ্ধিধারা
নারী হতেই বাঁচা-বাড়া
পুরুষেতে টানটি যেমন
মূর্ত্তি পা্য় তা সন্ততিতে।'

Post a Comment