Ads (728x90)

SRI SRI THAKUR VIDEO

Like this page

Recent Posts

World time

Add as a follower to automatically get updated Article. Jaiguru!

আমি জানি না আমার কতো জন্মের পুণ্যফলে আমি আমার প্রিয়পরম দয়াল ঠাকুরকে পেয়ে ধন্য হয়েছি।এই বিশ্বের প্রতিটি সত্ত্বাই তাঁর সুরে বাঁধা।তাঁর প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ। আমাদের মতো আর্ত পীড়িত মানুষকে উদ্ধার করতেই তিনি কষ্ট করে নররূপ ধারণ করে যুগে যুগে অবতীর্ণ হন এই ধরাধামে।

পরমদয়াল ঠাকুরকে আমি খুব ছোটবেলায় দর্শন করে ধন্য হয়েছিলাম।খরদহ-তে আমার বাবা ছিলেন রামপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য(এস.পি.আর)।মাও খুব ভক্তিমতী ইষ্টপ্রাণা ছিলেন।আমার তখন দু-তিন বৎসর বয়স হবে-বাবা মা দিদিদের সাথে দেওঘর যেতাম।পরম দয়াল ঠাকুর বড়াল বাংলোর যে ঘরে এখন শ্রীবিগ্রহ বসান,সেইখানেই বসেছিলেন দু’পাশে হাটুর নিচে কোল বালিশ দিয়ে।খালি গায়ে ধুতি পরে হাত জোড় করে।এপাশে তখন নাটমন্ডপ ছিলো না।বাঁশ দিয়ে ঘেরা ছিলো তিন দিক।দর্শনার্থীরা বাঁশের বাইরে দাড়িয়ে ঠাকুর দর্শন করতো।সেইখানে আমি আমার বাবার কাধে চেপে দূর থেকে ঠাকুরকে যেটুকু দর্শন করেছি তাঁর সেই রূপ আমি কোন দিন ভুলব না।গায়ের কোন জায়গা নীলাভ,কোন জায়গা হালকা গোলাপী,আবার কোন জায়গায় দুটো রঙ মেশানো।তাঁকে দর্শন করে চোখ সার্থক-জীবন সার্থক,এর কয়েক বছর পরেই তাঁর মানবলীলা শেষ হয়।
পরমদয়ালের অনুশাসনবাদ মেনে চলার মধ্য দিয়েই তাঁর আশীর্বাদ ফলপ্রসু হয় আমাদের উপর।এই শান্তির পথে থেকেই আমরা জীবন-বৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে পারি।আর এই চলা আমাদের বংশ পরম্পরায় যাতে অব্যাহত থাকে তার জন্যই তিনি রেখে গেলেন আমাদের সামনে আচার্য্য পরম্পরা, যা নাকি পূর্বে কোন মহাপুরুষ রেখে যাননি।এ আমাদের পরম পাওয়া-পরম সৌভাগ্য।আচার্য্যদেবের মধ্যেই আমরা পরম দয়ালকে দর্শন করি।তাঁর মধ্যেই তিনি লীলা করেন।পরমদয়াল নররূপ ত্যাগ করার পর আমরা পেলাম প্রধান আচার্য্যদেব শ্রীশ্রী বড়দাকে।তাঁর অপার করুণার ছোট্ট একটি ঘটনা তুলে ধরার চেষ্টা করছি এই অপটু লেখায়-
ইং ১৯৭০/৭১। আমি তখন সাত-আট বছরের। আমরা তিন ভাই তিন বোন। বোনেদের মধ্যে আমি সবার ছোট।ছোটবেলায় আমি খুব রোগে ভুগতাম আর খুব দুর্বল ছিলাম।সেই সময় আমার একবার কঠিন অসুখ করে,খুব কাশি,সঙ্গে জ্বরও আছে। অনেকদিন ধরে কমার নাম নেই।খড়দহ কল্যাণনগরে একজর ডাক্তার বসতেন, তিনি আমাদের বাড়ির সকলেরই কিছু অসুস্থতা হলে দেখতেন।বাবা আমাকে তার কাছে নিয়ে গেলেন,তিনি দেখে ঔষধ লিখে দিলেন,বেশ কিছুদিন খেলাম কিন্তূ কোন কাজ হলো না।বাবা আবার নিয়ে গেলেন তার কাছে।ডাক্তার বাবু চিন্তিত মনে ঔষধ পরিবর্তন করে দিলেন। কিছুদিন খাবার পর তাতেও কোন ফল হলোও না।বাবা মাও চিন্তিত হয়ে ডাক্তার বাবুকে জানালেন।তিনি আমাকে নিয়ে হাসপাতালে দেখাতে বললেন।পরদিন শ্যামবাজারের আর.জি.কর হাসপাতালে আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো।সেখানকার এক ডাক্তার আমাকে পরীক্ষা করে X-Ray করতে বললেন।বুকের X-Ray করা হয়।রিপোর্ট দেখে ডাক্তার বাবু ভীত হলেন।বুকে বেশ ক্ষত হয়েছে টি বি-এর লক্ষণ।ঔষধ লিখে দিলেন,আর খুব করে মাছ,মাংস,ডিম খেতে বললেন।আর বলেন এসব না খেলে এ রোগ সারবে না।শুনে আমার মন খারাপ হয়ে গেল কারণ ওসবে আমার ভীষণ অরুচি।আমাকে বাড়ি নিয়ে এসে বাবা-মা খুব করে চেষ্টা করলেন খাওয়াতে।যতবারই আমাকে খাওয়াতে চেষ্টা করেন ততবারই আমি বমি করে দিয়েছি।অনেক চেষ্টা করেও না খাওয়াতে পেরে আবার ছোটেন কল্যাণনগরে আমাদের পারিবারিক ডাক্তারের কাছে।তিনি আমাকে খুবই স্নেহ করতেন।আমার ডাকনাম মিনি।তিনি আদর করে বলেন মিনি মাছ-মাংস তো তোমাকে খেতেই হবে।হসপিটালের অত বড় ডাক্তার তোমাকে বলেছেন,তা না হলে তুমি ভালো হবে কি করে?বড় ডাক্তারের কথা কি তুমি শুনবে না?আমি মনে মনে অসন্তুষ্ট হয়ে উঠেছিলাম।ডাক্তারবাবুকে বললাম ডাক্তার বড় না আমার ঠাকুর বড়?ঠাকুর বলেছেন মাছ মাংস না খেতে।আমি খাবো না।ছোট মেয়ের মুখে বড় কথা শুনে তিনি আমাকে আর কিছু বললেন না।বাবা মায়ের সঙ্গে বাড়ে চরে এলাম।বাবা মা আমাকে নিয়ে ভীষণ চিন্তায় পড়েছেন।কী করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না।সেই সময় বাড়িতে এক গুরুভ্রাতা এলেন।তিনি বাবাকে বললেন,‘রামদা, মিনিকে নিয়ে ঠাকুরবাড়ি যাচ্ছেন না কেন? সেখানে গিয়ে নিবেদন করুন সমাধান পেয়ে যাবেন।’ বাবা মা তাই করলেন।ঠাকুরবাড়ী এসে শ্রীশ্রী বড়দার কাছে সব নিবেদন করা হলো।শ্রীশ্রী বড়দা আমার নিকট কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললেন- ‘ও ভালো হলে যাবে পরমপিতার দয়ায়।গরম ভাতে নরম ছানা মিশিয়ে পুরোটা চটকে নিয়ে ডাল তরকারি দিয়ে খাবি।ঔষধ যা দিয়েছেন তা চলবে,একমাস হলে বুকের একটা X-Ray করিয়ে ডাক্তারকে একবার দেখিয়ে নেবে।’ আমি বেঁচে গেলাম-আমাকে আর মাচ খেতে হল না।তারপর বাড়ি এসে একমাস ঐভাবে চলার পর X-Ray করিয়ে রিপোর্ট নিয়ে সেই হসপিটালের বড় ডাক্তারবাবুকে দেখানো হলো।বাবা মা সংশয় এর মধ্যে ছিলেন কি জানি রিপোর্টে কি হয়!ডাক্তারবাবু রিপোর্ট দেখে চমকে গেলেন।রোগের রেশ মাত্র রিপোর্টে নাই।আর অবাক হলেন যখন বাবা মায়ের কাছ থেকে শুনলেন যে আমি মাছ, মাংস, ডিম এসব কিছুই খাইনি।আমাদের আচার্য্যদেবের কথামতো ভাতের সঙ্গে ছানা চটকে খেয়েছি। তিনি বললেন এটি সত্যই মিরাকল্।কারণ এ রোগ এত তাড়াতাড়ি সারবার নয়।মাছ, মাংস খেলেও নয়।

পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা



শ্রীশ্রী বড়দার দয়ার কথা ভাবলে আজও আমার চোঁখে জল আসে।কারন জ্ঞান, বুদ্ধি, ভক্তি, ইষ্টানুরাগ কিছুই ছিলনা আমার,তাই তার অপার করুণায যে আমার জীবনটাই রক্ষা পেয়ে গেল তখন তা আাম অনুবব করতেই পারিনি।তাঁর দয়া আমি এবং আমরা সবাই অনেক অনেক পেয়েছি।পুজ্যপাদ দাদার মাধ্যমেও পাচ্ছি।পুজনীয় বাবাইদার মাধ্যমেও পাচ্ছি।ধন্য হচ্ছি-কৃত-কৃতার্থ হচ্ছি।শান্তি এবং আনন্দে ভরিয়ে তুলছেন আমাদের জীবনকে।পরম দয়ালের শ্রীচরণে আমার প্রতিদিনের প্রার্থনা তিনি শ্রীশ্রী দাদাকে সুস্থ শরীরে সুদীর্ঘজীবী করে বাঁচিয়ে রাখুন আমাদের মধ্যে।আমরা সবাই তাঁকে দর্শন করে-ভূলুন্ঠিত প্রনাম নিবেদন করে ধন্য হই, আনন্দিত হই, সার্থক হই!তাঁর শ্রীচরণে আমার শতকোটি প্রনাম, ‘জয়গুরু’।
‘বন্দে পুরুষোত্তমম্’ ।

Post a Comment