Ads (728x90)

SRI SRI THAKUR VIDEO

Like this page

Recent Posts

World time

Add as a follower to automatically get updated Article. Jaiguru!

আনুমানিক ৬৪৩ খৃষ্টপূর্বাব্দের এই দিনে কপিলাবস্তুর লুম্বিনীতে শাক্যবংশের রাজকুমার সিদ্ধার্থরূপে তথাগত গৌতম জন্মগ্রহণ করেন।কেবলমাত্র গৌতমের জন্মদিবস হিসেবেই নয়,তারকীর্তিময় জীবনের প্রতিটি উল্লেখযোগ্য ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছে বৈশাখের এই পূর্ণিমা।এই দিনেই তিনি বুদ্ধগয়ায় নির্বাণ লাভ করে বুদ্ধত্বে অধিষ্ঠিত হন;কুশীনগরে মহাপরিনির্বাণ প্রাপ্তিও এই একই দিনে।
গৌতমের প্রচারিত মতবাদ বৌদ্ধধর্ম নামে স্বীকৃত।অবশ্য একে ধর্ম না বলে একটি সার্বজনীন দর্শন বলাই সমীচিন।অন্যান্য ধর্মের ন্যায় গৌতম ঈশ্বর বা আত্মা নিয়ে স্পষ্টতঃ কিছু বলেন নি।তিনি মানুষকে পরকালের মোহে ভাসিয়ে দেন নি।গৌতম নিজেও তার প্রচারিত মতবাদকে কোন পৃথক ধর্মের আখ্যা দেন নি।এ প্রসঙ্গে বুদ্ধ বিশেষজ্ঞ রাইস ডেভিডস বলেন,"গৌতম হিন্দু হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন,বেড়ে ওঠেন,হিন্দু হিসেবেই পরিনির্বাণ লাভ করেন।তার মতাদর্শে এমন কিছুই ছিল না যা তার সমকালীন হিন্দু দর্শনে পাওয়া যায় না।"কিন্তু তা সত্ত্বেও গৌতমই প্রথম উপনিষদের সর্বভূতে সমদর্শনের নীতিকে সমাজের বৃহত্তর পর্যায়ে সফলতার সাথে প্রতিষ্ঠিত করেন।তিনি জাতিভেদপ্রথার মর্মমূলে আঘাত করে ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরুদ্ধে একটি নিরব বিদ্রোহের সূচনা করেন।সমাজসংস্কারে গৌতমের এই ভূমিকা পরবর্তীতে পুরো বিশ্বের ইতিহাসের গতিপথ নির্ধারণে অপ্রতিদ্বন্দী ভূমিকা রেখেছে।
তিনি ছিলেন বাস্তববাদী মনস্তাত্ত্বিক।কার্যকারণের নিয়মে বিশ্বাসী ছিলেন তিনি।শোনা যায়,তিনি বলেছিলেন,"আমার প্রতি শ্রদ্ধাবশতঃ কেউ যেন আমার বিধান গ্রহণ না করে;যেন আমার কথা প্রথমে পরীক্ষা করে নেয়া হয়,যেমন আগুনে সোনার পরীক্ষা হয়ে থাকে।"
মানুষের অন্তর্গূঢ় মানবতাকে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছেন আজীবন।
গৌতমের জীবনদর্শনের মূলভিত্তি ছিল অহিংসা।'অষ্টশীল 'নীতির মাধ্যমে তিনি একে সুপ্রতিষ্ঠিত করে গিয়েছেন।আজকাল চারিদিকে মানবধর্মের আইকনের ছড়াছড়ি-কিন্তু নিজের জীবনে মানবতাকে সবচেয়ে যথাযথভাবে মূর্ত করে গিয়েছেন তিনি।
গৌতম রক্তপাত ঘটাননি।যুদ্ধকে সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে ঘৃণা করতেন তিনি।তার আদর্শ চণ্ডাশোককে পরিণত করেছিল ধর্মাশোকে।এই আত্মসমাহিত পুরূষের মধ্যে রূপ পেয়েছে অবিচল সংযম ও স্থৈর্যের শক্তি।তাই মহাপরিনির্বাণের দু হাজার বছর পরেও তার প্রতিকৃতি স্বীকার হয়েছে ধর্মগাধাদের লাঞ্ছনার।যার প্রমাণ ২০০৩ এর বামিয়ান,কিংবা ২০১৩ এর রামু।
বুদ্ধদেবের যথার্থতম মূল্যায়ন করেছেন আরেক মহামনীষী,বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ।তার ভাষায়," যে বর্তমান কালে ভগবান বুদ্ধের জন্ম হয়েছিল সেদিন যদি তিনি প্রতাপশালী রাজরূপে, বিজয়ী বীররূপেই প্রকাশ পেতেন, তা হলে তিনি সেই বর্তমানে কালকে অভিভূতকরে সহজে সম্মান লাভ করতে পারতেন; কিন্তু সেই প্রচুর সম্মান আপন ক্ষুদ্র কালসীমার মধ্যেই বিলুপ্ত হত। মানব-কর্তৃক মহামানবের স্বীকৃতি মহাযুগের ভূমিকায়। তাই আজ ভগবান বুদ্ধকে দেখছি যথাস্থানে মানবমনের মহাসিংহাসনে মহাযোগের বেদীতে, যার মধ্যে অতীত কালের মহৎপ্রকাশবর্তমানকে অতিক্রম করে চলেছে।"
আজ এই যুগশ্রেষ্ঠ মহামানবের জন্মতিথিতে পৃথিবীর সকল প্রাণীর মঙ্গল কামনা করছি।
সর্ব্বে সত্তা সুখিতা ভবন্তু....

Post a Comment