একজন হিন্দু ছোট থেকে বড়ো হওয়া অবধি দেখে আসে যে সকল কাজে গঙ্গাজল ছিটিয়ে
পবিত্র করার রীতি। আসলেই কি গঙ্গার জলে এমন কোনো উপাদান আছে যা সকল কিছু
পবিত্র করে দিতে পারে না এটা শুধুই ধর্মীয় নিয়ম। চলুন আমরা সে বিষয়ে কিছু
তথ্য দেখে আসি।
১.গঙ্গাজলের ব্যাকটেরিয়া বিরোধী স্বভাব :
হিন্দুরা গঙ্গাজলকে সবসময় পবিত্র ও পানযোগ্য বলে বিশ্বাস করে আসছে। হিন্দুধর্মীয় অনুষ্ঠানাদিতে (জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি) গঙ্গাজলকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে দেখা হয়। কিন্তু এটা প্রমাণ করার সত্যিকার অর্থে কোনো বৈজ্ঞানিক যুক্তি আছে কিনা? ১৮৯৬ সালে ব্রিটিশ ব্যাকটেরিয়াবিদ আর্নেস্ট হ্যানবুরি হ্যানকিন গঙ্গাজলকে পরীক্ষা করে একটি প্রবন্ধ লেখেন যা এ প্রকাশিত হয়। এখানে বর্ণনা করা হয়েছে যে, কলেরা রোগের প্রধান কারণ ব্যাকটেরিয়া জীবাণুকে গঙ্গাজলে রেখে দিলে তা তিন ঘন্টার মধ্যে মারা যায়। টিক এই ব্যাকটেরিয়াই আবার ছেঁকে নেয়া জলে আটচল্লিশ ঘণ্টা পর্যন্ত বিস্তার লাভ করতে থাকে। তিনি প্রবন্ধে আরও উল্লেখ করেন- এ নদীর জল এবং এর পার্শ্ববর্তী যমুনা নদীর জল সেই সময়কার ভয়াবহ কলেরা রোগের জন্য দায়ী ছিল, একইভাবে ১৯২৭ সালে ফরাসী বংশো™ভূত কানাডিয়ার অণুজীববিদ কলেরা ও ডায়রিয়ায় মারা যাওয়া লোকদের ভাসমান দেহের কয়েক ফুট নিচ থেকে সংগৃহীত জলে কোন জীবাণু না পেয়ে বিস্মিত হন। ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী ভাইরাসের উপস্থিতিকেই গঙ্গাজলের গুণ ও পবিত্রতার কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
২.গঙ্গার পঁচন বিরোধী উপাদান :
নদীর জল সাধারণত পঁচে যায় যখন অক্সিজেনের অভাবে ব্যাকটেরিয়া জন্ম দেয় যা জলকে একটি ভিন্ন গন্ধ ও পঁচা স্বাদ প্রদান করে। গঙ্গা জলকে যদিও সবচেয়ে ময়লাযুক্ত বিবেচনা করা হয়। অনেকদিন ময়লায় ভরে থাকলেও এর জল পঁচে না। প্রকৃতপক্ষে, ব্রিটিশ চিকিৎসক সি. ই নেলসন নিরীক্ষা করে দেখছেন যে, গঙ্গার অন্যতম অপরিস্কার জায়গা হুগলী নদী থেকে ইংল্যান্ডে ফিরে যাওয়া জাহাজ কর্তৃক সংগৃহীত জল পুরো যাত্রাপথ জুড়েই নির্মল, পরিষ্কার ও সতেজ ছিল। একারণেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জাহাজগুলো ইংল্যান্ডে ফিরে যাওয়া সময় তিন মাসের পানীয় জল হিসেবে শুধুই গঙ্গাজল ব্যবহার করত। কারণ এটা থাকত স্বাদু ও সজীব। নয়া দিল্লীর ম্যালেরিয়া গবেষণা কেন্দ্র (Malaria Research Centre) পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, গঙ্গার উপরিস্তরের জলে মশা জন্মায়নি এবং এজল যখন অন্য জলের সাথে যুক্ত করা হলে সেখানেও মশার বংশবৃদ্ধিকে প্রতিরোধ করত।
৩.গঙ্গার উচ্চ দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা :
ভারতীয় পরিবেশ প্রকৌশলী ডি. এস. ভার্গব গঙ্গা নিয়ে তিন বছর গবেষণার মাধ্যমে এসিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, অন্যান্য নদীর তুলনায় গঙ্গা অত্যন্ত দ্রুত তার জৈব রাসায়নিক অক্সিজেন চাহিদা কমিয়ে আনতে সক্ষম। ভার্গব বলেন, সাধারণত জৈব উপাদানগুলো নদীর অক্সিজেনকে নিঃশেষ করে এবং পঁচতে শুরু করে। কিন্তু গঙ্গার এক অজ্ঞাত উপাদান এ জৈব উপাদান ও ব্যাকটেরিয়ার উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং তাদেরকে হত্যা করে। তিনি আরো বলেন, গঙ্গার নিজেকে পরিশুদ্ধ রাখার গুণ পৃথিবীর অন্যান্য নদীর তুলনায় পঁচিশ গুণ অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
৪.গঙ্গার ফ্যান :
নদীগর্ভস্থ ফ্যান হলো নদীর অত্যাধিক মাত্রার পলি থেকে গঠিত এক ভূমিরূপ। গঙ্গার (Bengal Fan) হলো পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ নদীগর্ভস্থ ফ্যান। এটি প্রায় ৩০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং প্রায় ১০০০ কি.মি. প্রস্থ যার সর্বোচ্চ পুরুত্ব ১৬.৫ কি.মি. বলা হয় যে, এ ফ্যান বঙ্গোপসাগর জুড়ে বিস্তৃত। স্রোত পলিকে স্থানান্তরিত করেছে কয়েকটি নদী গর্ভস্থ গিরিখাতের মাধ্যমে যেগুলোর কোনটি ১৫০০ মাইলের চেয়েও দীর্ঘ। এ ফ্যান এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে ভারতে কারণে এটা বিপুল পরিমাণ হাইড্রোকার্বনের গঠিত পদার্থ যেমন বেনজিন, প্যারাফিন, কয়লার গ্যাস মজুদের সম্ভাবনার ইঙ্গিত বহন করে।
৫.গঙ্গার জলের মজুদ :
বর্তমান সময়ে গঙ্গায় মারাত্মক জলের সংকট পরিলক্ষিত হচ্ছে। এক সময় বেনারসের চারদিকে গঙ্গার গড় গভীরতা ছিল ৬০ মিটার কিন্তু এখন কিছু কিছু স্থানে তা শুধুই ১০ মিটার। পাহাড়ী অঞ্চলে ধূলা থেকে উ™ভূত জলবায়ু পরিবর্তনের দরুন গঙ্গোত্রী হিমবাহ অত্যন্ত মারাত্মক হারে ঢালুতে পিছিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞগণ জলের সম্পদের নাজুক ব্যবস্থাপনা, কলকারখানার বর্জ্য ফেলা, পানি শোধন, ব্যবস্থা এবং অধিক জনসংখ্যাকে দায়ী করেন। এটা শুধু পরিবেশগত দুর্যোগের ঝুকিই সৃষ্টি করে না বরং আধ্যাত্মিক সংকটের সৃষ্টি করে। বিদেশী বিশেষজ্ঞান মনে করেন যদি এঅবস্থা চলতে থাকে এবং পুনঃখননের কোন পদক্ষেপ না গ্রহণ করা হয় তবে আমাদের জীবনেই আমরা অন্যতম একটি বড় সভ্যতার পরিসমাপ্তি দেখতে পাব।
৬.গঙ্গার বিশাল আকৃতি :
কাগজের পাতায় চোখ বুলিয়ে গঙ্গার সুবিশাল আকৃতিকে পরিমাণ উপলব্ধি করা খুবই দুরূহ। গঙ্গার প্রবাহ খুবই জটিল বিশেষ করে নিম্নাঞ্চলে। বাংলায় অবস্থিত এর জটিল শাখা প্রশাখা সঠিক দৈর্ঘ্য নির্ণয়ে জটিলতা সৃষ্টি করেছে। যা হোক, তারপরও এটা বিশ্বাস করা হয় যে এর দৈর্ঘ্য ২৫০০ কিলোমিটারের সামান্য বেশি। গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের পলিবাহিত গঙ্গা ব-দ্বীপ (বাংলাদেশ) পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ব-দ্বীপ। এটা প্রায় ৫৯০০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। শুধু আমাজান ও কঙ্গো নদীর জলের প্রবাহ গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের সম্মিলিত পানির প্রবাহের চেয়ে বেশি।
৭.গঙ্গা ব-দ্বীপ অব্যাখ্যাত ধ্বনি :
Mistpouffers or Barisal Guns হলো বিমানের শব্দের সাথে সামঞ্জস্য এক ধরনের ধ্বনি সে সম্পর্কে পৃথিবীব্যাপী নদীর তীরে বসবাসরত মানুষের কাছ থেকে শোনা গেছে বিশেষ করে ভারতে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের অঞ্চলে এ ধ্বনি শোনা গেছে। যদিও বলা হয় যে, এ ধ্বনির জেট বিমানের শব্দের সাথে মিল রয়েছে কিন্তু রহস্যজনক বিষয় হলো এ ধ্বনিগুলো বিমান আবিষ্কারের কয়েকগুণ সময় আগে থেকেই শোনা যাচ্ছে। ব্রিটিশ কর্মকর্তা T D La Touche ১৮৯০ সালের তাঁর একটি জার্নালে এসম্পর্কে লেখেন। তিনি লিখলেন, “ভূমিকম্পের সময় Barisal Guns ঘটে। কিন্তু এগুলো ভূমিকম্প ব্যতীত এবং বড় ভূমিকম্পের পূর্বেও কয়েকবার ঘটতে পারে। এই অস্পষ্ট ধ্বনিগুলো সম্পর্কে ভূমিকম্প, শিলা বিস্ফোরণ, ভূ-অগ্নুৎপাত, বিস্ফোরণধর্মী গ্যাসের নির্গমণ, ঝড়ের দ্বারা সৃষ্ট ঢেউ, সুনামি, উল্কা, দূরবর্তী বজ্রপাত এবং তথাকথিত গুরুগর্জনকারী বালুরাশি সম্পৃক্ত করে আপতত সৃষ্টি যথাযথ বেশ কয়েকটি ব্যাখ্যা রয়েছে।” এই শোনা যায় এবং তা বিশেষজ্ঞের বিভ্রান্তিতে ফেলে দেয়।
‘পাঞ্চজন্য’ (দ্বিতীয় সংখ্যা) সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত জানার্ল থেকে সংকলিত।
১.গঙ্গাজলের ব্যাকটেরিয়া বিরোধী স্বভাব :
হিন্দুরা গঙ্গাজলকে সবসময় পবিত্র ও পানযোগ্য বলে বিশ্বাস করে আসছে। হিন্দুধর্মীয় অনুষ্ঠানাদিতে (জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি) গঙ্গাজলকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে দেখা হয়। কিন্তু এটা প্রমাণ করার সত্যিকার অর্থে কোনো বৈজ্ঞানিক যুক্তি আছে কিনা? ১৮৯৬ সালে ব্রিটিশ ব্যাকটেরিয়াবিদ আর্নেস্ট হ্যানবুরি হ্যানকিন গঙ্গাজলকে পরীক্ষা করে একটি প্রবন্ধ লেখেন যা এ প্রকাশিত হয়। এখানে বর্ণনা করা হয়েছে যে, কলেরা রোগের প্রধান কারণ ব্যাকটেরিয়া জীবাণুকে গঙ্গাজলে রেখে দিলে তা তিন ঘন্টার মধ্যে মারা যায়। টিক এই ব্যাকটেরিয়াই আবার ছেঁকে নেয়া জলে আটচল্লিশ ঘণ্টা পর্যন্ত বিস্তার লাভ করতে থাকে। তিনি প্রবন্ধে আরও উল্লেখ করেন- এ নদীর জল এবং এর পার্শ্ববর্তী যমুনা নদীর জল সেই সময়কার ভয়াবহ কলেরা রোগের জন্য দায়ী ছিল, একইভাবে ১৯২৭ সালে ফরাসী বংশো™ভূত কানাডিয়ার অণুজীববিদ কলেরা ও ডায়রিয়ায় মারা যাওয়া লোকদের ভাসমান দেহের কয়েক ফুট নিচ থেকে সংগৃহীত জলে কোন জীবাণু না পেয়ে বিস্মিত হন। ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী ভাইরাসের উপস্থিতিকেই গঙ্গাজলের গুণ ও পবিত্রতার কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
২.গঙ্গার পঁচন বিরোধী উপাদান :
নদীর জল সাধারণত পঁচে যায় যখন অক্সিজেনের অভাবে ব্যাকটেরিয়া জন্ম দেয় যা জলকে একটি ভিন্ন গন্ধ ও পঁচা স্বাদ প্রদান করে। গঙ্গা জলকে যদিও সবচেয়ে ময়লাযুক্ত বিবেচনা করা হয়। অনেকদিন ময়লায় ভরে থাকলেও এর জল পঁচে না। প্রকৃতপক্ষে, ব্রিটিশ চিকিৎসক সি. ই নেলসন নিরীক্ষা করে দেখছেন যে, গঙ্গার অন্যতম অপরিস্কার জায়গা হুগলী নদী থেকে ইংল্যান্ডে ফিরে যাওয়া জাহাজ কর্তৃক সংগৃহীত জল পুরো যাত্রাপথ জুড়েই নির্মল, পরিষ্কার ও সতেজ ছিল। একারণেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জাহাজগুলো ইংল্যান্ডে ফিরে যাওয়া সময় তিন মাসের পানীয় জল হিসেবে শুধুই গঙ্গাজল ব্যবহার করত। কারণ এটা থাকত স্বাদু ও সজীব। নয়া দিল্লীর ম্যালেরিয়া গবেষণা কেন্দ্র (Malaria Research Centre) পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, গঙ্গার উপরিস্তরের জলে মশা জন্মায়নি এবং এজল যখন অন্য জলের সাথে যুক্ত করা হলে সেখানেও মশার বংশবৃদ্ধিকে প্রতিরোধ করত।
৩.গঙ্গার উচ্চ দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা :
ভারতীয় পরিবেশ প্রকৌশলী ডি. এস. ভার্গব গঙ্গা নিয়ে তিন বছর গবেষণার মাধ্যমে এসিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, অন্যান্য নদীর তুলনায় গঙ্গা অত্যন্ত দ্রুত তার জৈব রাসায়নিক অক্সিজেন চাহিদা কমিয়ে আনতে সক্ষম। ভার্গব বলেন, সাধারণত জৈব উপাদানগুলো নদীর অক্সিজেনকে নিঃশেষ করে এবং পঁচতে শুরু করে। কিন্তু গঙ্গার এক অজ্ঞাত উপাদান এ জৈব উপাদান ও ব্যাকটেরিয়ার উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং তাদেরকে হত্যা করে। তিনি আরো বলেন, গঙ্গার নিজেকে পরিশুদ্ধ রাখার গুণ পৃথিবীর অন্যান্য নদীর তুলনায় পঁচিশ গুণ অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
৪.গঙ্গার ফ্যান :
নদীগর্ভস্থ ফ্যান হলো নদীর অত্যাধিক মাত্রার পলি থেকে গঠিত এক ভূমিরূপ। গঙ্গার (Bengal Fan) হলো পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ নদীগর্ভস্থ ফ্যান। এটি প্রায় ৩০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং প্রায় ১০০০ কি.মি. প্রস্থ যার সর্বোচ্চ পুরুত্ব ১৬.৫ কি.মি. বলা হয় যে, এ ফ্যান বঙ্গোপসাগর জুড়ে বিস্তৃত। স্রোত পলিকে স্থানান্তরিত করেছে কয়েকটি নদী গর্ভস্থ গিরিখাতের মাধ্যমে যেগুলোর কোনটি ১৫০০ মাইলের চেয়েও দীর্ঘ। এ ফ্যান এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে ভারতে কারণে এটা বিপুল পরিমাণ হাইড্রোকার্বনের গঠিত পদার্থ যেমন বেনজিন, প্যারাফিন, কয়লার গ্যাস মজুদের সম্ভাবনার ইঙ্গিত বহন করে।
৫.গঙ্গার জলের মজুদ :
বর্তমান সময়ে গঙ্গায় মারাত্মক জলের সংকট পরিলক্ষিত হচ্ছে। এক সময় বেনারসের চারদিকে গঙ্গার গড় গভীরতা ছিল ৬০ মিটার কিন্তু এখন কিছু কিছু স্থানে তা শুধুই ১০ মিটার। পাহাড়ী অঞ্চলে ধূলা থেকে উ™ভূত জলবায়ু পরিবর্তনের দরুন গঙ্গোত্রী হিমবাহ অত্যন্ত মারাত্মক হারে ঢালুতে পিছিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞগণ জলের সম্পদের নাজুক ব্যবস্থাপনা, কলকারখানার বর্জ্য ফেলা, পানি শোধন, ব্যবস্থা এবং অধিক জনসংখ্যাকে দায়ী করেন। এটা শুধু পরিবেশগত দুর্যোগের ঝুকিই সৃষ্টি করে না বরং আধ্যাত্মিক সংকটের সৃষ্টি করে। বিদেশী বিশেষজ্ঞান মনে করেন যদি এঅবস্থা চলতে থাকে এবং পুনঃখননের কোন পদক্ষেপ না গ্রহণ করা হয় তবে আমাদের জীবনেই আমরা অন্যতম একটি বড় সভ্যতার পরিসমাপ্তি দেখতে পাব।
৬.গঙ্গার বিশাল আকৃতি :
কাগজের পাতায় চোখ বুলিয়ে গঙ্গার সুবিশাল আকৃতিকে পরিমাণ উপলব্ধি করা খুবই দুরূহ। গঙ্গার প্রবাহ খুবই জটিল বিশেষ করে নিম্নাঞ্চলে। বাংলায় অবস্থিত এর জটিল শাখা প্রশাখা সঠিক দৈর্ঘ্য নির্ণয়ে জটিলতা সৃষ্টি করেছে। যা হোক, তারপরও এটা বিশ্বাস করা হয় যে এর দৈর্ঘ্য ২৫০০ কিলোমিটারের সামান্য বেশি। গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের পলিবাহিত গঙ্গা ব-দ্বীপ (বাংলাদেশ) পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ব-দ্বীপ। এটা প্রায় ৫৯০০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। শুধু আমাজান ও কঙ্গো নদীর জলের প্রবাহ গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের সম্মিলিত পানির প্রবাহের চেয়ে বেশি।
৭.গঙ্গা ব-দ্বীপ অব্যাখ্যাত ধ্বনি :
Mistpouffers or Barisal Guns হলো বিমানের শব্দের সাথে সামঞ্জস্য এক ধরনের ধ্বনি সে সম্পর্কে পৃথিবীব্যাপী নদীর তীরে বসবাসরত মানুষের কাছ থেকে শোনা গেছে বিশেষ করে ভারতে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের অঞ্চলে এ ধ্বনি শোনা গেছে। যদিও বলা হয় যে, এ ধ্বনির জেট বিমানের শব্দের সাথে মিল রয়েছে কিন্তু রহস্যজনক বিষয় হলো এ ধ্বনিগুলো বিমান আবিষ্কারের কয়েকগুণ সময় আগে থেকেই শোনা যাচ্ছে। ব্রিটিশ কর্মকর্তা T D La Touche ১৮৯০ সালের তাঁর একটি জার্নালে এসম্পর্কে লেখেন। তিনি লিখলেন, “ভূমিকম্পের সময় Barisal Guns ঘটে। কিন্তু এগুলো ভূমিকম্প ব্যতীত এবং বড় ভূমিকম্পের পূর্বেও কয়েকবার ঘটতে পারে। এই অস্পষ্ট ধ্বনিগুলো সম্পর্কে ভূমিকম্প, শিলা বিস্ফোরণ, ভূ-অগ্নুৎপাত, বিস্ফোরণধর্মী গ্যাসের নির্গমণ, ঝড়ের দ্বারা সৃষ্ট ঢেউ, সুনামি, উল্কা, দূরবর্তী বজ্রপাত এবং তথাকথিত গুরুগর্জনকারী বালুরাশি সম্পৃক্ত করে আপতত সৃষ্টি যথাযথ বেশ কয়েকটি ব্যাখ্যা রয়েছে।” এই শোনা যায় এবং তা বিশেষজ্ঞের বিভ্রান্তিতে ফেলে দেয়।
‘পাঞ্চজন্য’ (দ্বিতীয় সংখ্যা) সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত জানার্ল থেকে সংকলিত।
Post a Comment