শুভ জন্মাষ্টমী। পরমপুরুষ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ আবির্ভাব তিথি মহোত্সব।
বিশ্বব্যাপী সনাতন ধর্ম বিশ্বাসীগণের কাছে এ তিথির গুরুত্ব ও তাত্পর্য
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে এ বিশেষ তিথি
উপলক্ষে কৃষ্ণপ্রীতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
কলুষিত পরিবেশ মানব মনকে কলুষিত করে তোলে। জগতের কলুষিত বন্ধন যখন জীবের সত্তাকে কলুষিত করে বিপথগামী করে তখন পৃথিবীতে দেখা দেয় পাপকার্য। ন্যায়-সত্য তখন পাপের ছায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। সাধু-সজ্জনদের সাত্ত্বিক শক্তি অপহূত হয় অপশক্তির বিভীষিকার কাছে। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন সময় অনেকবার এসেছে। যুগে যুগে, কালে কালে এমন সংকটপূর্ণ অবস্থায় স্রষ্টা কর্তৃক প্রেরিত শক্তি বিভিন্ন রূপে পৃথিবীতে এসে সেসব অপশক্তিকে সমূলে উত্পাটিত করে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠা করেছেন। জনমনে সত্যের বাণী স্থাপন করেছেন। ন্যায়ের পক্ষে ভগবদ্ ধর্ম প্রতিষ্ঠা করে জীবশিক্ষার জন্য বিভিন্ন কর্ম করেছেন। আগামী দিনে সত্যের পথে চলার মতো আলোকবর্তিকারূপী বিভিন্ন শিক্ষা দিয়ে গেছেন।
সনাতন ধর্মও এ প্রক্রিয়ার ব্যতিক্রম নয়। সনাতন ধর্মীয় শাস্ত্র মতে, যুগে যুগে বিপথগামী মানুষদের সত্ পথে ফিরিয়ে আনার জন্য এবং অপশক্তিকে ধ্বংস করে ন্যায় ও সত্যের প্রতিষ্ঠার জন্য ভগবান বিভিন্নরূপে এ পৃথিবীতে অবতরণ করেন। ভগবানের এই অবতরণের জন্যই তিনি অবতার বলে পরিচিত হন। সনাতন ধর্মের শাস্ত্রে বর্ণিত চারটি যুগের মধ্যে সত্য ও ত্রেতা যুগের মতো দ্বাপর যুগেও ভগবান এ পৃথিবীতে অবতরণ করেছেন।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ লোক শিক্ষার জন্য অর্জুনের মাধ্যমে মূলত আমাদের সকলকে শিক্ষা দিয়েছেন। জীব হিসেবে আমরা অণু চেতনার অধিকারী হলেও কলুষিত পরিবেশে আমরা নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি। জাগতিক মোহ, যশ-খ্যাতি আর অর্থ-বিত্তের মায়াজালে আচ্ছন্ন হয়ে আমরা ভুলে যাই আমাদের করণীয় ভগবদ্কর্ম সম্পর্কে। অন্যায়, অসত্য ও পাপের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে আত্ম অহংকারে স্ফীত হয়ে ভগবানের অধীনতা অস্বীকার করি। আর্থিক সুখে মোহাবিষ্ট হয়ে ভগবানের সাথে আমাদের চিন্ময় সম্পর্কের কথাও ভুলে যাই। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনের মাধ্যমে গীতার যে জ্ঞান দান করেছেন তা যদি আমরা গ্রহণ করি এবং যথার্থভাবে পালন করি তবে কোনো প্রকার অন্যায় ও অসত্ পন্থা আমাদের ভগবদ্ চেতনাকে স্পর্শ করতে পারবে না।
পরম চেতনার অধিকারী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত গীতার জ্ঞান যুগ যুগ ধরে মানবজীবনে সম্মুখে চলার পথনির্দেশক। এ জ্ঞানের আলোয় আলোকিত জগতে কোনো প্রকার অন্যায়, অসত্য কিংবা অপশক্তির স্থান নেই। বরং সর্বপ্রকার ভীরুতা দূর করে অন্যায়কে প্রতিহত করার শিক্ষা ভগবদ্গীতা আমাদের দান করে। কলুষিত পরিবেশের বহিঃশত্রু ও অন্তঃশত্রুর হাত থেকে জীবসত্তাকে রক্ষা করে, ভগবানের আনন্দবিধানের জন্য করণীয় সম্পর্কে জ্ঞান ও উপদেশ এ গীতার মাধ্যমে আমরা পেতে পারি। আজকের কলুষিত বিশ্বের বিপথগামী মানুষদের সত্ পথে ফিরিয়ে আনা, বিশ্বব্যাপী চলমান অশান্তি নিরসনে শান্তি আনয়ন এবং হিংসা-দ্বেষ ভুলে গিয়ে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ এক পৃথিবী এক মানব সমাজ গঠনে শ্রীমদভগবদ্ গীতা হোক সকলের পাথেয়। পরম চেতনার অধীশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অনুপম উপহার এ ভগবদ্ গীতার জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত হোক আমাদের আগামী দিনের চলার পথ। আজকের এই পুণ্য তিথিতে এই হোক আমাদের একমাত্র প্রার্থনা।
লেখক :পি এইচ ডি গবেষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, সাংগঠনিক সম্পাদক, শ্রীচৈতন্য শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংঘ, বাংলাদেশ
কলুষিত পরিবেশ মানব মনকে কলুষিত করে তোলে। জগতের কলুষিত বন্ধন যখন জীবের সত্তাকে কলুষিত করে বিপথগামী করে তখন পৃথিবীতে দেখা দেয় পাপকার্য। ন্যায়-সত্য তখন পাপের ছায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। সাধু-সজ্জনদের সাত্ত্বিক শক্তি অপহূত হয় অপশক্তির বিভীষিকার কাছে। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন সময় অনেকবার এসেছে। যুগে যুগে, কালে কালে এমন সংকটপূর্ণ অবস্থায় স্রষ্টা কর্তৃক প্রেরিত শক্তি বিভিন্ন রূপে পৃথিবীতে এসে সেসব অপশক্তিকে সমূলে উত্পাটিত করে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠা করেছেন। জনমনে সত্যের বাণী স্থাপন করেছেন। ন্যায়ের পক্ষে ভগবদ্ ধর্ম প্রতিষ্ঠা করে জীবশিক্ষার জন্য বিভিন্ন কর্ম করেছেন। আগামী দিনে সত্যের পথে চলার মতো আলোকবর্তিকারূপী বিভিন্ন শিক্ষা দিয়ে গেছেন।
সনাতন ধর্মও এ প্রক্রিয়ার ব্যতিক্রম নয়। সনাতন ধর্মীয় শাস্ত্র মতে, যুগে যুগে বিপথগামী মানুষদের সত্ পথে ফিরিয়ে আনার জন্য এবং অপশক্তিকে ধ্বংস করে ন্যায় ও সত্যের প্রতিষ্ঠার জন্য ভগবান বিভিন্নরূপে এ পৃথিবীতে অবতরণ করেন। ভগবানের এই অবতরণের জন্যই তিনি অবতার বলে পরিচিত হন। সনাতন ধর্মের শাস্ত্রে বর্ণিত চারটি যুগের মধ্যে সত্য ও ত্রেতা যুগের মতো দ্বাপর যুগেও ভগবান এ পৃথিবীতে অবতরণ করেছেন।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ লোক শিক্ষার জন্য অর্জুনের মাধ্যমে মূলত আমাদের সকলকে শিক্ষা দিয়েছেন। জীব হিসেবে আমরা অণু চেতনার অধিকারী হলেও কলুষিত পরিবেশে আমরা নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি। জাগতিক মোহ, যশ-খ্যাতি আর অর্থ-বিত্তের মায়াজালে আচ্ছন্ন হয়ে আমরা ভুলে যাই আমাদের করণীয় ভগবদ্কর্ম সম্পর্কে। অন্যায়, অসত্য ও পাপের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে আত্ম অহংকারে স্ফীত হয়ে ভগবানের অধীনতা অস্বীকার করি। আর্থিক সুখে মোহাবিষ্ট হয়ে ভগবানের সাথে আমাদের চিন্ময় সম্পর্কের কথাও ভুলে যাই। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনের মাধ্যমে গীতার যে জ্ঞান দান করেছেন তা যদি আমরা গ্রহণ করি এবং যথার্থভাবে পালন করি তবে কোনো প্রকার অন্যায় ও অসত্ পন্থা আমাদের ভগবদ্ চেতনাকে স্পর্শ করতে পারবে না।
পরম চেতনার অধিকারী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত গীতার জ্ঞান যুগ যুগ ধরে মানবজীবনে সম্মুখে চলার পথনির্দেশক। এ জ্ঞানের আলোয় আলোকিত জগতে কোনো প্রকার অন্যায়, অসত্য কিংবা অপশক্তির স্থান নেই। বরং সর্বপ্রকার ভীরুতা দূর করে অন্যায়কে প্রতিহত করার শিক্ষা ভগবদ্গীতা আমাদের দান করে। কলুষিত পরিবেশের বহিঃশত্রু ও অন্তঃশত্রুর হাত থেকে জীবসত্তাকে রক্ষা করে, ভগবানের আনন্দবিধানের জন্য করণীয় সম্পর্কে জ্ঞান ও উপদেশ এ গীতার মাধ্যমে আমরা পেতে পারি। আজকের কলুষিত বিশ্বের বিপথগামী মানুষদের সত্ পথে ফিরিয়ে আনা, বিশ্বব্যাপী চলমান অশান্তি নিরসনে শান্তি আনয়ন এবং হিংসা-দ্বেষ ভুলে গিয়ে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ এক পৃথিবী এক মানব সমাজ গঠনে শ্রীমদভগবদ্ গীতা হোক সকলের পাথেয়। পরম চেতনার অধীশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অনুপম উপহার এ ভগবদ্ গীতার জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত হোক আমাদের আগামী দিনের চলার পথ। আজকের এই পুণ্য তিথিতে এই হোক আমাদের একমাত্র প্রার্থনা।
লেখক :পি এইচ ডি গবেষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, সাংগঠনিক সম্পাদক, শ্রীচৈতন্য শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংঘ, বাংলাদেশ
Post a Comment