টিপু
সুলতান বনাম ইংরেজ, লড়াইয়ে এক নেটিভ সেপাই ধরা পড়ল। টিপুর বাহিনী তার
নাকটি কেটে ছেড়ে দিল। এক দিশি বৈদ্য নতুন নাক তৈরি করে দিলেন। ব্রিটিশ
জার্নালে সে খবর পড়ে সার্জন জে সি কার্পু পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু করলেন।
১৮১৬: আধুনিক চিকিৎসায় শুরু হল ‘প্লাস্টিক সার্জারি’। কিন্তু বৈদ্যের গুরু
কে? সুশ্রুত। তাঁর পদ্ধতিতে দু’হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে অস্ত্রোপচার
চলছিল ভারতে। তার রচিত গ্রন্থ সুশ্রুত সংহিতা।
কিন্তু চিকিৎসাশাস্ত্র ও রসায়নের এমন রচনা বিশ্বে বিরল। ১২০ রকমের
সার্জারির যন্ত্রের উল্লেখ রয়েছে, তার ৫৬টির বিশদ বর্ণনা। ব্যবহারের আগে
যন্ত্রগুলি জলে ফুটিয়ে নেওয়া হত, রোগীকে অজ্ঞান করা হত নানা মদিরা দিয়ে।
১৪ রকম পদ্ধতিতে ১৫ রকম ফ্র্যাকচার সারানোর কথা বলা হয়েছে। আধুনিক
বিজ্ঞান এ সব পদ্ধতির পুনরাবিষ্কার করেছিল উনিশ শতকে।
উল্লেখ্য,
প্রাচীন ভারতে বিশেষ করে বাংলা অঞ্চলে শল্য চিকিৎসারও ব্যাপক প্রসারের
খোঁজ পাওয়া যায়। চরকের মতো সশ্রত নামে একজন শল্য চিকিৎসক ‘সশ্রত সংহিতা‘
রচনা করেন, যিনি কাশীর অধিবাসী ছিলেন বলে ধারণা করা হয়। তাকে ভারতবর্ষের
সার্জারির জনক বলে বিবেচনা করা হয়। তার বইটিও আরবি, ফার্সিসহ জার্মান
ভাষাতেও অনূদিত হয়। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে সশ্রত তার বইয়ে শতাধিক
সার্জারির প্রক্রিয়ার বর্ণনা দিয়ে গেছেন, সেই সঙ্গে দিয়েছেন অসংখ্য
সার্জিকাল যন্ত্রপাতির বিবরণ।
কামারদের কাছ থেকে কী করে অতি
সূক্ষ সেসব যন্ত্র বানিয়ে নিতে হবে, তারও উপদেশ রয়েছে তার বইয়ে।
প্রাচীনকালে শাস্তিস্বরূপ অনেকের নাক কেটে দেয়া হতো। সশ্রত দেহের অন্য অংশ
থেকে চামড়া এনে সেই নাক মেরামতের বর্ণনা দিয়েছেন। একে আধুনিক প্লাস্টিক
সার্জারির আদি রূপ বলা যেতে পারে। —
Post a Comment