Ads (728x90)

SRI SRI THAKUR VIDEO

Like this page

Recent Posts

World time

Add as a follower to automatically get updated Article. Jaiguru!

  শ্রীরামচন্দ্র পিতৃসত্য পালনের জন্য চৌদ্দ বৎসর বনবাস গিয়েছিলেন।  শ্রীশ্রীঠাকুর প্রায়ই বলতেন - আমি যা করেছি মাকে খুশী করার জন্য, তার ইচ্ছে পূরণ করার জন্যে। বালক শ্রীশ্রীঠাকুরের অংক পরীক্ষার দিন স্নান ও খাওয়া করতে একটু দেরী হয়ে গেল। মা কথার কথা বললেন - অনুকূল তুই এত দেরী করলি, একটি অংকও করতে পারবি না। বালক অনুকূল পরীক্ষার প্রশ্ন হাতে নিয়ে বসে আছেন, কাঁদছেন। সব কটা অংক তার জানা কিন্তু মা বলেছেন একটি অংকও করতে পারবি না, পিছে মার কথা মিথ্যা হয়, তাই একটি অংকও করলেন না। একদিন বালক ঠাকুরের বেশ পা-কেটে গেল। দর-দর করে রক্ত ঝরছে। মা বললেন - ও কিছু না, তুই স্কুলে যা। মা বললেন কিছু না, ঐ বিশ্বাসে স্কুলে রওনা হলেন। মাতৃভক্তি বটে!
 হেমায়েতপুর আশ্রমে জমিজমা নিয়ে নানারকম গন্ডগোল চলছে। আশ্রমের আয়তন বাড়ছে, আর প্রতিবেশীর হিংসাও প্রবল হয়ে উঠছে। তার জন্যে শ্রীশ্রীঠাকুরকে, ও আশ্রমের অনেক কর্ম্মীকে অনেক রকম হেনস্থা হতে হচ্ছে। এই ব্যাপারে একজন মুসলমান সেদিন মাতা মনোমোহিনী দেবীকে অপমান করে কথা বলল। সে অপমান শ্রীশ্রীঠাকুরের অন্তরে মর্ম্মান্তিক হয়ে আঘাত করল। মাতা মনমোহিনী দেবীকে অপমান! এ-যে শ্রীশ্রীঠাকুরেরই সত্তায় চরম আঘাত। শ্রীশ্রীঠাকুর ও বড়মা সারাদিনরাত জল পর্যন্ত মুখে দেন নাই। শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্য জল ও ভাতের থালা এগিয়ে দেওয়া হল। ঠাকুর ছোট শিশুর মত ডুকরে ডুকরে কাঁদছেন, ভাত মেঝেতে ফেলে দিলেন, থালা দূরে ঠেলে দিলেন। বললেনÑ‘আমি কুকুর! মার অপমান আমার সহ্য করতে হচ্ছে! আমার থালায় খাওয়া শোভা পায় না।’  মেঝে থেকে থাবা-থাবা ক’গাল ভাত খেলেন শ্রীশ্রীঠাকুর। শ্রীশ্রীঠাকুর ও বড়মা দুজনই কাঁদছেন। (জয়তু মে জননী -২৫০)

§ তোমার পিতৃপুরুষকে অর্ঘ্য-অবদানে তৃপ্ত করতে ভূলো না, তোমার ঐ তর্পণ ঈশ্বরে সার্থক হয়ে উঠুক; তিঁনি চির-তৃপ্তিময়, শান্তিময়, চিরপ্রশংসনীয়।
§ তুমি সন্ন্যাসী হও আর মহাজ্ঞানীই হও, নিজের মা-বাবার কথা ভূলে যেওনা জীবনের ইমারতের প্রথম ভিত্তি ঐ মা বাবা।
§ তোমার মাতা-পিতার বিশেষ বৈশিষ্ট্য-সঙ্গতির আশীর্ব্বাদী মুহূর্ত্ত তোমার সম্ভাব্যতাকে সুচারু স্ফুরণায় উদ্ভিন্ন করে তুলেছে, ঐ বৈশিষ্ট্যের বিশেষ সঙ্গতির বিশেষ মুহূর্ত্তে ছাড়া তোমার সম্ভাব্যতার কোন সম্ভাবনাই ছিল না; তাই, তুমি তাদের কাছে চির-কৃতজ্ঞ, তোমার জীবন-বর্দ্ধন ও স্ফুরণা তাদেরই অনুশাসনী অবদান, তুমি উদ্দীপ্ত আগ্রহে ইষ্টার্থ অনুদীপনায় ঈশ্বরে লক্ষ্য রেখে বল - পিতা স্বর্গ, পিতা ধর্ম্মঃ, পিতাহি পরমন্তপঃ, পিতরি প্রীতিমাপন্নে প্রীয়ন্তে সর্ব্বদেবতাঃ” বল - গভীর উদাত্ত কন্ঠে আবার বল - ত্রিষু লোকেষু নাস্তি মাতৃসমা গুরুঃ”। 
প্রশ্নঃ সুরেশভাই - ঠাকুর! বাড়িতে মার সঙ্গে ঝগড়া করে চলে এসেছি, মুখে যা আসছে যা তা বলেছি অবান্তর।
শ্রীশ্রীঠাকুর - (গম্ভীর ভঙ্গিতে) যাদের পাত্র ছোট হয়, তারা বড় জিনিস ধরে রাখতে পারে না, সব হুড়-হুড় করে বের হয়ে যায়। হেগে-মুতে চেঁচায়ে-মেচায়ে অস্থির করে তোলে সবাইকে। ভগবান তখন কন ‘পুনর্র্মষিকো ভব’। দিতে চাইলাম, ধারণ করলি না, নিলি না, রাখতে পারলি না, পেলি না, আমি করব কি? আমি করতে চাইলাম তোকে সিংহ, তুই মুষিকের বেশী হতে পারিস না, কি করব? যাক্ প্রথম পরীক্ষাটা দিয়ে আয়তো।  মার পা চেপে ধরে বলবি - মা! আমাকে ক্ষমা কর, আর দাও দেখি একটু পায়েরধূলি। তাই একটু মাথায় নিয়ে, একটু খেয়ে চলে আসবি। জোরে কথা বলবি না, বিনয়ভরা রকমে যাবি। লাখ চিমটি কাটলেও, টিটকারী দিলেও কথা কবি না। আয় ঘুরে। যা এখনই করে আয়। (সুরেশ ভাই মায়ের উদ্দেশ্যে চলে গেল)। যে বোধ, বিবেচনা, সহ্য, ধৈর্য্য, সহানুভূতি, অধ্যবসায় ও অন্তর্দৃষ্টি থাকলে প্রত্যেকের ভিতরকার ভালটা টেনে বের করা যায়, তা আমাদের মধ্যে খুব কম লোকেরই আছে।
 জন্ম দিল যে-জন তোমার জন্মপালী যে,
তাঁরাই তোমার দেবতা প্রথম সেবায় দুঃখ নাশে।
 জনক-জননী জন্মভূমিতে নিষ্ঠাশ্রদ্ধা নাইকো যাহার,
দুষ্টক্রমী হয়েই চলে অন্তর-বাহির প্রায়ই তাহার।
 জননী আর জন্মভূমি স্বর্গ হতে ও গরিয়সী,
মায়েরই নাম দূর্গা জেনো দূর্গতিরই হয় সে বশী।
 ভিটামাটি বাড়ীর যেটা পূর্ব্বপুরুষ করেছে বাস,
শ্রদ্ধাভরে রাখবি তারে ছাড়িস্নে তা’ গেলেও শ্বাস।
 বাস্তু-ভিটায় নাইকো প্রীতি নয় দরদী লোকজনে,
নাইকো নিষ্টা, নাই সততা, কোথায় তৃষ্ণা ভজনে?
 পিতৃপুরুষের ভিটেমাটি আমাদের কাছে এত প্রিয় কেন? কারণ, তা আমাদের পিতৃপুরুষের লীলাভূমি, আমাদের প্রাণন-উপাসনার মন্দির।
 যে দেশেই তুমি থাকনা কেন যে বাড়িতে বসত্ কর,
প্রিয়র বাড়ি বুঝবে সেটাই প্রীতির শাসন মুখ্যতর।
 আর্য্যস্থান পিতৃস্থান উচ্চ সবার পূর্য্যমান।
 আর্য্যকৃষ্টির যা ব্যাঘাত খড়েগ তোরা কর নিপাত।
 ঋষিযজ্ঞ, দেযবজ্ঞ, পিতৃযজ্ঞ, ভূতযজ্ঞ আর লোকপূজা -যার শিষ্ট সুবিধানে রয়ই দেশটা উর্জ্জী-তেজা।
 শ্রীশ্রীঠাকুর - তাঁর জন্মস্থান হিমায়েতপুরের একতিল পরিমান ভূমি বিক্রয়, বিনিময় বা একুজিশনের একটি টাকাও গ্রহণ করেন নাই।বরং তিনি বলেছেন - একদিন পাবনা পাটনা এক হবে, ওখানে শান্ডিল্যবিশ্ববিদ্যালয় হবে, পাবনার হেমায়েতপুর হবে পৃথিবীর পরমতীর্থ।
 কোন দেশটি দেখতে গেলে গ্রাম দেখিস্ সবার আগে,
শহরগুলি দেখিস্ পরে গ্রামের পরিপ্রেক্ষী রাগে।
 গ্রাম্য আকাশ, গ্রাম্য বাতাস গ্রাম্য বান্ধব-বন্ধন,
এতেই জীবন উথলে উঠে হৃদয়ও পায় রঞ্জন।
 গ্রামের মানুষ, গ্রামের স্বাস্থ্য গ্রামের বাড়ী, গ্রামের ঘর,
গ্রামের বিদ্যা, সহজ জ্ঞান অবস্থাতে হিসেব কর।
শ্রীশ্রীঠাকুর গ্রামকে বড় ভালোবাসতেন। গ্রাম্য আকাশ-বাতাস,নদ-নদী, ফুল-ফসল যেন তাঁর অস্থি-মজ্জা-রক্ত-মাংসের সঙ্গে মিলে মিশে একাকার। কবির ভাষায় - ধনধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদেরই বসুন্ধরা - ‘সুজলা সুফলা শষ্য শ্যামলা, ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড় ছোট ছোট গ্রামগুলি’। বিখ্যাত কবিতাটি মনে পড়ে - দেখিতে গিয়েছি পর্Ÿতমালা, দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু,
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দ’ুপা ফেলিয়া
একটি ধানের শিষের উপর একটি শিশির বিন্দু।
‘সে যত সুন্দর হোক ইন্দ্রধনু সুদূর আকাশে আঁকা, আমি ভালবাসি মোর ধরনীর প্রজাপতিটির পাখা’। শ্রীশ্রীঠাকুর বার-বার হেমায়েতপুরের কথা বলতেন। 
§ আমি কৃষির উপর এত জোর দিচ্ছি এজন্য যে জীবনটা যত পরনির্ভরশীল না হয়ে আত্মনির্ভরশীল হয় ততই ভাল। এটা আমাদের হাতের ভিতরকার জিনিস। এর উপর দাঁড়িয়ে সহজেই আমাদের পেটের ভাতের ব্যবস্থা হতে পারে। কিন্তু কৃষিটাকে আজকাল আমরা অনেকখানি অমর্য্যাদাকর মনে করি। আমরা সব ভদ্রলোক হয়েছি কিনা তাই চাকরীর দিকেই নজর বেশী। কৃষিটা যেন ভদ্রলোকের কাজ নয়। অথচ একথা ভুলে যাই যে আমাদের জনক, আমাদের বলরাম নিজ হাতে কৃষি করে গেছেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ব্রজের মাঠে গরু চরিয়েছেন। কৃষির সঙ্গে আমাদের কৃষ্টির আছে একটা নাড়ীর যোগ।
জমিজমা কৃষিভরা ধান্য-গোধূম-শালী,
প্রলয়েও সে নষ্ট না পায় যাপে স্বজন পালি।


Post a Comment