রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য (সহ প্রতি ঋত্কি), শ্রীহট্ট সৎসঙ্গ বিহার, সিলেট, বাংলাদেশ |
বড়ভাই হোজাইতে কিছুদিন চাকুরি করার পরে ডিগবয়ে আমাদের মামার বাসায় চলে যান। সেখানে অরুন, তপন এবং অচিন্ত্য ব্যানার্জী নামে তিন সৎসঙ্গী ভাইয়ের সাথে পরিচয় হয় এবং তাদের একান্ত সহযোগীতায় ১৯৫৯ ইংরেজী সালে আমার দাদা শ্রীশ্রীঠাকুর দর্শনে দেওঘর যান। মনমোহনী ধামে থাকা এবং ফিলানথ্রপীতে কাজ করে একমাস পাঁচদিন পর শ্রীশ্রীঠাকুরের শুভাশীষ ও নির্দেশ পেয়ে আমাদের দেশের বাড়ি তৎকালীন পাকিস্থানে চলে আসেন ১৯৬০ সালের প্রথম দিকে। সে সময়ে দাদার আসাম চলে যাওয়ার কারনে মাত্র ১৩ বছর বয়সে পরিবারের দায়িত্ব আমাকেই বহন করতে হয়। দাদা দেশে ফেরার পর সকাল বিকাল দাঁড়ায়ে বসে বিভিন্ন ভঙ্গিতে দীর্ঘ প্রার্থনা করেন এবং নিরামিষ আহার গ্রহন করেন। ফিরে আসার কিছুদিন পর দাদা চাকরি পান; সময় তার আপন গতিতে সমহিমায় চলতে থাকে। ইতিমধ্যে আমাদের এলাকার প্রায় আটশত ঘর লোকের মধ্যে উনি আরও চারজন দীক্ষিত লোক খুজে পান; যারা বিভিন্ন সময়ে ভারতে গিয়ে দীক্ষা গ্রহন করেছেন। যদিও দেশে ফিরে তারা তেমন কিছু করতেন না। তবে এ অবস্থায় তারা মিলিত হয়ে মাঝে মধ্যে সৎসঙ্গ করেন। ১৯৬৭ সনে এই পাঁচজন মিলে শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মতিথি পালনের উদ্যোগ নেন এবং আমার বাবার কাছে গিয়ে জন্মতিথি আমাদেরই বাড়িতে উদ্যাপনের অনুমতি চান। বাবা পরম আনন্দের সাথে সদয় অনুমতি দেন এবং শুভ তালনবমী তিথির দু’দিন পূর্বে আমার দাদাকে ডেকে জানতে চান শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মের সময়। সময়ক্ষণ জানার পর বাবা গননা করে পরের দিনই দাদার কাছে জানতে চান - শ্রীশ্রীঠাকুরের দীক্ষার পদ্ধতি কী? দাদা উত্তরে জানান - ঋত্বিকের মাধ্যমে দীক্ষা হয়। বাবা বলেন - এটাই শাস্ত্র সিদ্ধ। উৎসবে ঋত্বিক আনতে হবে। কারণ শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মলগ্ন বিচার করে জানলাম - তিনি একজন যুগাবতার; তাই সবাই তার সদ্ নামে দীক্ষা নিতে হয়। আমাদের দাদা পরম আনন্দে সুদূর ৩৩ মাইল দূরে সিলেট গিয়ে শ্রী গনেন্দ্র নাথ চৌধুরী নামে এক ঋত্বিকদাকে নিয়ে আসেন এবং বাবার নির্দেশে আমাদের মা সহ পরিবারের সকলের দীক্ষা হয়। এরপর বাবা নবদ্বীপে তাঁর গুরুপাঠে পত্র দ্বারা শ্রীশ্রীঠাকুর পরম অবতার পুরুষ বলে তার সব প্রমানাদি পাঠিয়েছিলেন - তার কোন প্রত্যুত্তর মেলেনি। তবে আমাদের বাবা বলেছিলেন - তোমাদের আর বিষ্ণু পূজার প্রয়োজন নেই। যারা জীবনে জীয়ন্ত বিষ্ণু পায় তাদের জীবনে শিলা বিষ্ণুর পূজা প্রয়োজন নেই।’ আজ আমাদের বাবা নেই; তাঁর যাজনে অনেক লোক সদ্দীক্ষা গ্রহণ করেন। তাই সদ্গুরু গ্রহণ করে আমাদের প্রয়াত বাবারই অবদান। তাঁর চরণে আমাদের শতকোটি প্রণাম। যে সত্য পথের, অমৃত পথের সন্ধান তিনি দেখিয়েছেন তা আমাদের পরম পাওয়া। পৃথিবীতে যে সম্পদ পেলে আর কোন কিছুরই অপূর্ণতা থাকে না। সেই চির সুন্দরের রাতুল চরণে আজো আমরা আছি। যে নবদিগন্তের উন্মোচন একদিন আমার জীবনে হয়েছিল তা এখনো আমার স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করে ভাসে। হয়তো এ কারনে পরম পিতা বলেছিলেন,
পিতা স্বর্গ পিতা ধর্ম
পিতাই তপের বন্দনা।
পিতা প্রীতি ছাড়িয়ে আনে
সব দেবতার বন্দনা।।
সকলেই সকলের অস্তি-বৃদ্ধির পরিপোষণকারী হয়ে ওঠা ভাল। পরম পিতার মহান আদর্শ ছড়িয়ে পড়–ক সবার অন্তরে, জেগে উঠুক ভ্রাতৃত্ব বোধ । বন্দে পুরুষোত্তমম্
লেখক:
রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য (সহ প্রতি ঋত্কি), শ্রীহট্ট সৎসঙ্গ বিহার, সিলেট, বাংলাদেশ
JAIGURU
ReplyDeleteজয়গুরু
ReplyDeleteজয়গুরু
ReplyDeleteজয় গুরু
ReplyDeleteজয় গুরু
ReplyDeleteJoyGuru
ReplyDelete