Ads (728x90)

SRI SRI THAKUR VIDEO

Like this page

Recent Posts

World time

Add as a follower to automatically get updated Article. Jaiguru!


নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু তিনবার ঠাকুর দর্শনে আসেন। প্রথমবার আসেন I.C.S পাশ করার পর। ঠাকুর তখন কলকাতাতেই, দ্বিতীয় ও তৃতীযবার আসেন পাবনা সংসঙ্গ আশ্রমে। সুভাষ বসুর মা-বাবা ঠাকুরের দীক্ষিত ও একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন। একবার তারা ভক্তমন্ডলী সহ ঠাকুরকে পুরীতে নিয়ে গিয়েছিলেন। undefinedসেদিনটি ছিল ১৯২২ সালের ৩১শে ডিসেম্বর। সেখানে ‘হরনাথ লজে’ প্রায় দুমাস রেখেছিলেন ঠাকুরকে। এই আদর্শ সৎসঙ্গী পরিবারের সন্তান সুভাষ বসু মা-বাবার কাছেই ঠাকুরের অমৃত জীবন কথা শুনেছিলেন। সুভাষ বসু ঠাকুর দর্শনে পাবনা সৎসঙ্গ আশ্রমে এলে ঠাকুরের অন্যতম ভক্তপার্ষদ পূজনীয় শ্রী সুশীল বসু তাঁকে আশ্রমের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখান।ঠাকুরের মতাদর্শ ও তাঁর পরিকল্পনার বিভিন্ন বিষয় নেতাজীর কাছে তুলে ধরেন সুশীলদা। আশ্রম ঘুরে নেতাজীর খুবই ভালো লাগল যে ঠাকুরের অধিকাংশ প্রচারকেরা বিবাহিত এবং সংসারী। ঠাকুরকে মাথায় রেখে সংসার ঠিক রেখেও বিশ্বসংসারের মাঙ্গলিক-ব্রতে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন এঁরা। আশ্রম ঘুরে নেতাজী বললেন - “সাধারনতঃ আশ্রম বলতে লোকে সন্ন্যাসী বা গৃহত্যাগীদের আশ্রমই বোঝে। গৃহী হয়ে পরিবার সহ আশ্রম জীবন -যাপন করবার দৃষ্টান্ত আপনারাই প্রথম দেখাচ্ছেন। পরিবার পরিজনের ভার ঘাড়ে করে,দৈন্য অভাব অভিযোগের মধ্য দিয়ে আপনারা এগিয়ে চলেছেন। তাই আমার মনে হয়, আপনারা একটা বড় গুরুদায়িত্ব নিয়েছেন। আপনারা যদি সত্যি সত্যি এভাবে আশ্রম গড়ে তুলতে পারেন তাহলে আপনারা দেশের কাছে একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন। গৃহী হয়েও আশ্রমজীবন যাপন করা যায় একথা লোকের কাছে আর অবিশ্বাস্য বলে বোধ হবে না।
এরপর নেতাজী ঠাকুরের কাছে এসে ভক্তিভরে প্রাণাম করলেন। নেতাজীকে বসবার যে চেয়ার দেওয়া হয়েছে সেখানে বসলেন না তিনি - মাতৃভক্ত নেতাজী বললেন - "ঠাকুর আমার মায়ের ইষ্ট তাঁর সামনে আমি চেয়ারে বসতে পারি না"। বলে ঠাকুরের পদপ্রান্তেই বসে পড়লেন নেতাজী। ঠাকুর সস্নেহে নেতাজীর মা-বাবা এবং পরিবারের অন্যান্য সকলের কুশল সংবাদ নিলেন। তারপর নেতাজী ঠাকুরকে বললেন - “দেশের তো নানা কাজই করবার আছে। তা দেশের প্রকৃত সেবা করতে হলে কোথা থেকে আরম্ভ করতে হবে ? এ বিষয়ে আপনার মত কি? ঠাকুর নেতাজীর দিকে গভীর স্নেহল চোখে তাকালেন। তারপর ভাব বিভোর কন্ঠে বললেন -“আমার কথা হচ্ছে দেশের কাজ করতে হলে প্রথম মানুষ তৈরীর কর্মসূচী নিতে হবে। ভাল মানুষ পেতে হলেই বিবাহ-সংস্কার আশু প্রয়োজন। আর এটা এমনভাবে করতে হবে যাতে সব বিয়েগুলিই Compatible (সুসঙ্গত) হয়, আর Compatible বিয়ে মানেই বিহিত সঙ্গতি। বর্ণ, বংশ, আয়ু, স্বাস্হ্য ইত্যাদি সব হিসাব করে দেখে শুনে কজ করতে হয়। বিহিত বিবাহ হলেই ভাল সন্তানাদি আসে আর তখন তাদেরই দ্বারাই দেশের, দশের সবারই কাজ হয়। সেইজন্য মানুষ তৈরীর ব্যবস্থা আগে করা প্রয়োজন। দাশদা (দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ) যখন আমায় বললেন যে তিনি মানুষ খুঁজে পাচ্ছেন না যার উপর ভার দিয়ে তিনি একটু সরে দাঁড়তে পারেন তার উত্তরে আমি একথাই বলেছি”।
ঠাকুরের কথা শুনে নেতাজীর চোখেমুখে গভীর চিন্তার ছাপ পড়ল। তাঁর চিন্তা জগত নতুন আলোড়ন সৃষ্টি হলো যেন।
নেতাজী ঠাকুরকে বললেন- মানুষ তৈরীর যে আশু প্রয়োজন তা ভেবেছি,কিন্তু তা করতে হলে যে বিবাহ সংস্কার প্রয়োজন তা ভেবে দেখিনি।.... এখন ভেবে দেখছি ভাল সংস্কার-সম্পন্ন শিশু যদি না জন্মায় শুধু শিক্ষা তাদের বিশেষ কি করতে পারে ? বীজ থেকেই তো গাছ হয়, বীজ ভাল হলেই গাছ ভাল হবে। এটা আপনার কথা শুনে বুঝতে পারছি। কিন্তু এতে দীর্ঘসময় সাপেক্ষ।
ঠাকুর দৃপ্তকন্ঠে বললেন - দীর্ঘ সময় তো নেবেই - আমরা তো এতদিন পর্যন্ত জাতির বা সমাজের জন্য কিছুই করিনি। বহু গলদ জমে গেছে। সাফ করতে সময় নেবে বৈকি ? কোন Shortcut Programme (সংক্ষিপ্ত কর্মসূচী) এ জাতির সত্যিকার কল্যান হবে বলে আমার মনে হয়না।

সম্পাদনায়:
পরিচালক, শ্রেয় অন্বেষা
(শ্রীশ্রীঠাকুরের আদর্শবিষয়ক একটি গবেষণা প্রতিষ্টান)

undefined

Post a Comment