Ads (728x90)

SRI SRI THAKUR VIDEO

Like this page

Recent Posts

World time

Add as a follower to automatically get updated Article. Jaiguru!


কেবল একজন দ্রষ্টা, যার রয়েছে আমাদের অস্তিত্বের পরিপূরনী জ্ঞান; যার মধ্যে আমরা অনুভব করি জীবনের পূর্ণতা, যার স্পর্শ, সাহচর্য্যে আমরা আমাদের আত্মিক জীবনকে উপলব্দি করি এবং স্বাধীনতা উপভোগ করি দেহের গন্ডি পেরিয়ে; যার মধ্যে আমরা আবিষ্কার করি নব শক্তি, নব আশা, নব উৎসাহ ও নব ভালবাসার উৎস; এবং যিনি আমাদের অন্ধকার, অজ্ঞতা ও ভয় থেকে রক্ষা করেন, তিনিই হয়ে উঠেন বিশ্বের পথ প্রদর্শক। যিনি আমাদের মধ্যে এইধরনের অস্তিত্বমূখী জ্ঞানকে সঞ্চারণ ও চিরস্থায়ী  করেন, তিনিই আমাদের বিশ্বগুরু।

 বর্তমান সময়ে রোগ, শোক, দূর্যোগ এবং অশান্তিতে জর্জরিত আমাদের এ শ্যামল ধরিত্রী। পুরো বিশ্ব আজ হিংসাত্মক যুদ্ধের ভয়াবহতায় শংকিত। রূগ্ন আত্মা ও যন্ত্রনাগ্রস্থ মন নিয়ে আমরা ক্লান্ত। পারমানবিক শক্তির আবিষ্কারের পর থেকেই পৃথিবীর অস্তিত্ব হুমকি নিয়ে আমরা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছি। একটি সুইচ টিপেই নিমিষেই বিশ্বেই দুই-তৃতীয়াংশ ধ্বংস করে দেওয়া যাবে। আজ মানব জাতি ভাগ্যের চ্যালেঞ্জের সম্মূখীন। বিজ্ঞানের এত উৎকর্ষতার পরেও আমরা এসব যুগান্তকারী অর্জনগুলোর মধ্যে শান্তি খুজে পাচ্ছি না। বরংচ, অর্থনীতি ও রাজনৈতিক বিভিন্নমূখী চাপ আমাদের অধিকতর অবিশ্বাস ও দ্বন্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে মানবতার মুক্তির আলো ম্রিয়মান। দিন দিন এ সমস্যাগুলো তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। পশুর মত আমরা নিজেরা নিজেদের সাথেই যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছি। বিশ্বের রাজনীতিবিদ ও বিজ্ঞানীরা মানবজাতিকে এ দানবরূপী যুদ্ধ থেকে বিরত রাখতে ব্যর্থ হয়েছে এবং মনোজাগতিক সুখ ও শান্তি আনয়নে তাদের চরম ব্যর্থতা আজ অজানা কোন বিষয় নয়। কোন রংস বা মতবাদই যে খারাপকে ভালতে রূপান্তর করতে পারে না,  এ কথাটি বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আমরা দেখছি। তাই আমরা এ সিদ্ধান্তে উপনিত হতে পারি রাজনৈতিক তত্ত্ব এবং বিজ্ঞানের অর্জনগুলোই এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য যথেষ্ট নয়।
ড. দু নাউ বলেন, “Today when humanity is threatened with complete destruction by the liberation of atomic forces, people begin to realize that the only effective protection lies in a greater and higher moral development  (আজ যখন আনবিক শক্তির উত্তান পরো মানব জাতির অস্তিত্বকে পুরোপুরি ধ্বংসের হুমকি হিসেবে দাড়িয়েছে , তখন আমরা উপলব্দি করছি কার্যকরী প্রতিরক্ষা নিহিত আছে আরোতর ও উচ্চতর নৈতিক উন্নতিতে )”। নৈতিকভাবে উন্নত হওয়ার জন্য আমাদের নিজেদের চরিত্রকে সুগঠিত করতে হবে। মৌলিক অর্থে এটিই আমাদের সকল সমস্যার সমাধানের পথে যাওয়ার পথ। শুধুমাত্র নৈতিক ও আধ্যাত্মিক চেতনার বিকাশের  মাধ্যমে আমরা আমাদের হৃদয়ের যন্ত্রনা ও মনের অসন্তুষ্টি অতিক্রম করতে পারব। শুধু নিজের নয়, অন্যের জন্য আমাদের কি করণীয় তার উপলব্দিও আসে। এভাবেই হতাশার অশেষ বৃত্ত থেকে আমরা বের হয়ে আসতে পারব। আমাদের তথাকথিত নেতারা তাদের অহং সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠাতেই ব্যস্ত। কোথায় সে অনন্য নেতা, অনুধাবনকারী ব্যক্তিত্ব, যিনি সামর্থবান আমাদের এ অবস্থা থেকে বের করে নিয়ে আসতে?
আমি বিশ্বাস করি শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্র ছিলেন তেমনি অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। ১২৯৫ সনে ৩০ ভাদ্র তালনবমী তিথিতে তাঁর জন্ম।  তিনি শুধু বাংলাদেশ বা পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা , বিহার, আসামের জন্য নয়, এমনকি বাংলা, ভারত কিংবা আমেরিকার জন্য নয়। তিনিতো ছিলেন এ ধরিত্রীর সকলের জন্য, অনাগত সময়ের জন্য। তাঁরই প্রবর্তিত প্রতিষ্টান ‘সৎসঙ্গ’, যা মানুষে মানুষে মহামিলনের তীর্থ স্থান। এখানে হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম, খ্রিষ্টান, জৈন, শিখ, পারসী, প্রাচ্য, পাশ্চাত্য, বাঙ্গালী, বিহারি, মনিপুরী, দক্ষিন ভারতীয়, গুজরাটি, মহারাষ্ট্রীয়, উড়িয়া,অসমীয়া, কমিউনিস্ট, কংগ্রেসম্যান, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক, বিজ্ঞানী, শিল্পী, সৈনিক, জ্ঞানী-মূর্খ , ধনী-গরীব, পুজিপতি-শ্রমিক, পুরুষ-নারী, সৎ-অসৎ, ভাল-মন্দ প্রতি প্রত্যেকেই স্থান পেয়েছে। এককথায় বলতে গেলে, পথিবীর সকল শ্রেণীর মানুষ একত্রিত হয়েছিল এই মহাপ্রেমিককে কেন্দ্রায়িত করে। এ স্থান পরিনত হয়েছিল সকল সত্ত্বার এক স্বগীয় মিলনের ভিত্তিভূমিতে। শ্রীশ্রীঠাকুর এ জগতের মানব জাতির সকল সমস্যার যুক্তিসম্মত সমাধান দিয়েছেন। এমনকি তিনি অভিষ্যতের অনেক সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন এবং তার সমাধান দিয়েছেন। তিনি এসব সমস্যার সমাধান দিয়েছেন, যখন তিনি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সাথে কথোপকথন করেছেন। মাঝে মধ্যে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে মৌলিক এবং জীবনীয় তত্ত্ব উপস্থাপন করেছেন সাধারন আলোচনার ভঙ্গিতে। যেমন: শিক্ষা, রাজনীতি, শিল্প, বিবাহ, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, সাহিত্য, অর্থনীতি এবং আইন। এগুলো ইতিমধ্যে প্রকাশিতও হয়েছে। এই সাহিত্যগুলো ধারাবাহিক ও বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে বৈশ্বিক।
তিনি পূর্বতন সকলকে পরিপূর্ণ করেছেন, তাদেরকে বর্তমান সমাজে নবরুপে আবিষ্কার ও অর্থপূর্ণ করার মধ্য দিয়ে। তাদের উপযোগীতা বর্তমান একবিংশ শতাব্দিতে অনুভব করানোর মধ্য দিয়েই কাজটি আরোতর সহজবোধ্য হয়েছে। আমাদের ধর্মগ্রন্থগুলোর অনেক জটিলতা ও পারষ্পরিক দ্বন্ধ অবসান করেছেন প্রাঞ্জল ব্যাখ্যায়।  তিনি প্রকাশ করেছেন নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, যা পুরানোকেও আমাদের জীবনে করেছে অর্থপূর্ণ। তিনি কৃষি, শিল্প, বানিজ্য, এবং আরো অনেক বিষয়ে নতুন ধারনা ও কর্মপদ্ধতি দিয়েছেন যা মানব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সবচেয়ে মনোমুগ্নকর ও অতীব প্রয়োজনীয় যে বিষয়ে তিনি অজস্র উপদেশ দিয়েছেন তা হলো কিভাবে আরো উন্নত ও কর্মদক্ষ মানুষের আগমন ঘটানো যায়। তিনি বলেছেন, উন্নত মানুষ কেবলমাত্র  বিবাহ সংস্কারের মধ্য দিয়েই সম্ভব। যা প্রজনন বিজ্ঞানসম্মত। তিনি বলেছেন, A man is born, not made  । ভাল বা মন্দের দিকে মানুষের যে সহজাত প্রবৃত্তি তা শিক্ষা বা নিয়মনীতির মধ্য দিয়ে প্রদান করা সম্ভব নয়। এটা জন্মের মধ্য দিয়েই মানুষ লাভ করে। আমরা এখানে পলিশিং করতে পারি মাত্র। সুসন্তান কেবল সুপ্রজনন হতেই আসতে পারে, আর এ সুপ্রজনন নির্ভর করে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্য ।
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র clashless  (দ্বন্ধহীন) সমাজে বিশ্বাস করতেন, classless(শ্রেনীহীন) সমাজে নয়। মানব প্রকৃতির ভিন্নতাকে অস্বীকার করা যায় না। ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের মধ্যেই বিশ্ব সাম্য প্রতিষ্টিত। মানুষের মধ্যে এই ভিন্নতা সহজাত বৈশিষ্ট্য। শ্রীশ্রীঠাকুর যার যার বৈশিষ্ট্যনুপাতিক কাজের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এত লজ্জা বা নিন্দার বিষয়টিই অবান্তর। সমাজে প্রতেকে এক অপরের পরিপূরক। মহাত্মা গান্ধীও বর্ণাশ্রমের কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, “It is inherent in human nature, and Hinduism has reduced it to a science. It does attach by birth. A man cannot change his varna by choice. Varna is not a man-made law to be imposed or relaxed at will.” (প্রকাশিত হয়েছে ইন্ডিয়া টুডে, ১লা অক্টোবর, ১৯৭৮)। প্রখ্যাত দার্শনিক ও মহান ব্যক্তিত্ব যেমন; ড. আলেক্সিস ক্যারেল (চিকিৎসা বিদ্যায় নোবেল প্রাপ্ত, যার বিখ্যাত গ্রন্থ Man, The Unknown) , সক্রেটিস, প্রফেসর কনক্লাইন, বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ফ্লেবিন বাউয়ার এবং হ্যাভলক এলিস এ বিষয়ে ঐক্যমত প্রদর্শন করেছেন।
আমরা এমন একটা সময় অতিক্রম করছি যেখানে মানুষের জীবন অনেকটা কৃত্রিম হয়ে পড়েছে। এখানে সর্বত্রই শারিরীক, মানসিক  ও নৈতিক অধ:পতন ঘটেছে। বুদ্ধিমান লোকেরা অসৎ উপায়ে সম্পদ আহরণের প্রতিযোগীতায় নেমেছে। তারা সত্য জেনেও তার বিকৃতি ঘটাচ্ছে আত্ম-স্বার্থে অন্ধ হয়ে। তারা বুঝতে পারছেনা বা ভাবছেনা অনাগত ভবিষ্যতের কথা এমনকি তার আপন সন্তানদেরও কথা। কারণ এ নীতি নৈতিকতাহীন বিশ্বে কেউই নিরাপদ নয়। তার দায় খানিকটা হলেও আমরা প্রতি-প্রত্যেকের। আমরা সভ্যতার কথা বলি, কিন্তু পরিতাপের বিষয় আমাদের মধ্যে খুব কম মানুষই জানেন কিভাবে সভ্য হতে হয়। জকমকি পোষাক-পরিচ্ছদই কি সভ্যতা?  প্রতিটি কাজে সততা, ভদ্রতা ও সেবামূখর কার্যকর অংশগ্রহনই সত্যিকারের সভ্যতা। কর্মদক্ষ ও সমব্যাথি হওয়ার জন্য ভক্তি ও প্রাজ্ঞ্যতার প্রতি আনুগত্যই হল সভ্যতা। আমাদের সামনে দুটি পথই খোলা আছে । একটি জীবনের পখ, অন্যটি মরনের। বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত আমাদের।
লেখক: বৃন্দদ্যুতি চৌধুরী, পরিচালক, শ্রেয় অন্বেষা (শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের জীবন ও কর্মভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান)


Post a Comment

  1. Sri Sri Thakur prabartita nitya prartha mantrer antarbhukta 'panchabarhi' & 'saptarchi'r madhye ye bidhansamuh royechhe, seguloke materialise na korte parle savyatar samne simahin bipod. tai istapratisthamulok sadhu udyogke sadhubad janai. joyguru, pronam.
    Tapan Das, kolkata

    ReplyDelete
  2. PRATISTAN spelling=PRATISTHAN habe.

    ReplyDelete