Ads (728x90)

SRI SRI THAKUR VIDEO

Like this page

Recent Posts

World time

Add as a follower to automatically get updated Article. Jaiguru!



শরতের আগমন ইতিমধ্যে অনুভূত হচ্ছে প্রকৃতির চিরচেনা পরিবর্তনও আমাদের আন্দোলিত করে কিছুদিন আগে গেল শুভ জন্মাষ্টমী (শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি) শুভ তালনবমী তিথি (শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের জন্মতিথি) দরজায় কড়া নাড়ছে শারদীয় দূর্গোৎসব যথারীতি উত্তম দা ফোন লিখতে হবে মহালয়াতে গত কযেকবছর ধরে লিখছি শারদ সাময়িকীতে উত্তমদার অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রতিবারই অসাধারণ হয়ে উঠে এই সাময়িকী সত্যি বলতে কি অর্থ আমাদের অনেক আছে, অভাব ধরনের সৃষ্টিশীল, সামাজিক, ধর্মীয় দায়বদ্ধ মানুষের

ভাবছিলাম, এবার কোন বিষয়ে লেখা যায় আমি একজন সৎসঙ্গী,  খুব সকালেরাধাস্বামী নাম জো গাওয়ে সোঈ তরে অপূর্ব প্রাতঃকালিন প্রার্থনা শেষে মাথায় এলো মহালয়া নিয়েই লিখব, তবে আঙ্গিক হবে ভিন্ন অতঃপর শুরু............


মহালয়া কি?
শারদীয় দূর্গাপূজার দিন আগে অতি মাঙ্গলিক একটি অনুষ্ঠান মহালয়া, যা আদি শক্তি মহামায়ার আবির্ভাব এর বার্তা বহন করে এটা মা দূর্গাকে ধরণীতে আগমনের জন্য একধরনের আমন্ত্রনজাগো তুমি জাগো  মন্ত্র উচ্চারণ ভক্তিমূলক গানের মাধ্যমে তাঁকে আহবান করা হয়

মহালয়া এত জনপ্রিয় কেন?
বিগত ১৯৩০ সাল, অল ইন্ডিয়া রেডিওতে খুব সকালে একটি নতুন অনুষ্ঠান সংযুক্ত হয় যার নাম ছিল মহিষাসুর মর্দিনী অল ইন্ডিয়া রেডিওয়ের এই অনুষ্ঠানটি ছিল, চন্ডিকাব্যের আবৃত্তি, বাংলা ভক্তিগীতি, শাস্ত্রীয় সংগীত অসাধারণ যন্ত্রসংগীতের সমন্বয় পরবর্তীতে অনুষ্ঠানটি হিন্দীতে অনুবাদ করে, একই সময়ে ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলোতে সস্প্রচার করা হয় আমরা বাংলাদেশে অল  ইন্ডিয়া রেডিও তথা আকাশবানী থেকেই সম্প্রচার শুনে আসছি                                                                         
মহালয়া বলতে আমরা  এখন এই অনুষ্ঠানটিকেই বুঝি এরা একে অপরের সমার্থক শব্দ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে আজ যুগ ধরে, আমরা বাঙালী হিন্দুরা মহলিয়ার দিন খুব ভোরে, প্রায় সকাল ৪টার সময় রেডিও টিউনিং করে মহিষাসুর মর্দিনী অনুষ্ঠানের সম্প্রচার শুনি
 
জাদুকর বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র         

একজন মানুষ, যিনি চিরস্মরনীয় হয়ে থাকবেন মহালয়াকে এতটা জনপ্রিয়, হৃদয়গ্রাহী করে তোলার জন্য তিনি আর কেউ নন, ইংরেজীতে যাকে বলে ঞযব ড়হব ধহফ ড়হষু বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র মহিষাসুর মর্দিনী অনুষ্ঠানের পেছনে রয়েছে তার জাদুকরী কন্ঠস্বর এই কিংবদন্তী পবিত্র চন্ডি শ্লোকগুলো আবৃত্তি করেছেন এবং মা দূর্গার ধরাধামে আগমনের গল্প বর্ননা করেছেন তার অনন্য বাচনভঙ্গিতে
তিনি ইহলোক ত্যাগ করেছেন অনেকদিন হয়েছে, কিন্তু এখনো তার রেকর্ডকৃত কন্ঠস্বর মহালয়া অনুষ্ঠানের মূল অংশ জুড়ে রয়েছে বীরেন্দ্র ভদ্রের জোরালো, গাম্ভীর্যপূর্ণ আবৃত্তি মহালয়ার ঘন্টা আমাদের মধ্যে প্রানচাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে, প্রতিটি গৃহবাসী মানুষ স্বর্গীয় এক পরিবেশ অনুভব করে, আমাদের আত্মা কিছু সময়ের জন্য বৈষয়িকতার উর্দ্ধে উঠে পরম শক্তির প্রার্থনায় রত হয়


 
এক অনন্য সৃষ্টিকর্ম         
                                                                                                          
 মহিষাসুর মর্দিনী ভারতীয় শিল্প জগতে এক অতুলনীয় গীতিনাট্য যদিও এর মূল প্রতিপাদ্য পৌরণিক এবং মন্ত্রগুলো বৈদিক, এই অনুষ্ঠিানটি এক মাইল ফলক সৃষ্টিকারী কম্পোজিশন এর মূল স্ক্রিপ্ট রচনা করেছেন বানী কুমার, আর ধারাবর্ননায় ছিলেন বীরেন্দ্র ভদ্র অসাধারণ সুর সৃষ্টি পরিকল্পনায় ছিলেন অমর সুর¯্রষ্ঠা পঙ্কজ মল্লিক গানে কন্ঠ দিয়েছেন যারা, তাদের নতুন করে পরিচয় দেয়াটা ধৃষ্টতা মনে হয় কালজয়ী সংগীত শিল্পী হেমন্ত কুমার আরতি মূখার্জী
যখন আবৃত্তি শুরু হয়, সকালের প্রশান্ত বায়ু যেন স্পন্দিত হতে থাকে শঙ্খের দীর্ঘ সুর ¦নিতে সাথে সাথে সম্মিলিত কন্ঠে আবৃত্তি, আবহ তৈরি হয় চন্ডী শ্লোক উচ্চারণের

 
মহিষাসুর মর্দিনীর কাহিনী

গল্পের কাহিনী বেশ আকর্ষণীয় শুরুতে দেবতাদের প্রতি অসুররাজ মহিষাসুরের ক্রমবর্দ্ধমান নিষ্ঠুরতার বর্ননা দেয়া হয় তার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে দেবতারা বিষ্ণুর শরণাপন্ন হন কিভাবে মহিষাসুরকে দমন করে সত্য ন্যায় প্রতিণ্ঠা করা যায় আলোচনায় ব্রহ্মা, বিষ্ণু মহেশ্বরের (শিব) মিলিত তেজে আবির্ভূত হল এক নারী, যার দশানন তিনিই দশভূজা, দূর্গতিনাশিনী দূর্গা তিনিই মহাবিশ্বে আদ্যাশক্তি রুপে আর্বিভূত
অন্যান্য দেবতারা আর্শিবাদ স্ব-স্ব অস্ত্র দিয়ে পরিপূর্ণ করলো মহামায়াকে রণসাজে সজ্জিত হয়ে, সিংহ বাহনে চড়ে দেবী যুদ্ধ শুরু করলেন মহিষাসুরের সাথে ভয়ংকর যুদ্ধের মাধ্যমে দেবী মহিষাসুরকে তাঁর ত্রিশুল দিয়ে বধ করলেন স্বর্গ মর্ত্যধাম বিজয়ে ধন্য ধন্য করতে লাগল পরিশেষে, মন্ত্র উচ্চারণ সমাপ্তি হয় মহাশক্তির নিকট আমাদের সকল প্রার্থনা নিবেদন করে
আমি শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের জীবন কর্মের আলোকে আর্যকৃষ্টি প্রচারধর্মী গবেষণা প্রতিষ্ঠান, শ্রেয় অন্বেষা পক্ষ থেকে বীরেন্দ্র ভদ্র, পংকজ মল্লিক, বানী কুমার, হেমন্ত কুমার আরতী মূখার্জীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি সকলের প্রতি আমার বিণীত অনুরোধ, উৎসব মানেই আনন্দ তাই শারদোৎসব হবে আনন্দময় কিন্তু মাতৃ আরাধনার নামে আমি যেন কোন বোনকে, মাকে অপমানিত না করি মাতৃ আরাধনা যেন নারীকে শ্রদ্ধা তার যোগ্য মর্যাদা দেওয়ার চিরায়ত বৈদিক পৌরণিক শিক্ষা আমাদের মধ্যে জাগ্রত করে মায়েদের উদ্দেশ্যে করজোড়ে নিবেদন, শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বলেছেন, নারী হতে জন্মে জাতি থাকলে জাত তবেই জাতি আরো বলেছেন, পুরুষ নষ্টে যায় না জাত, নারী নষ্টে জাত কুপোকাত তাই আমাদের প্রতিটি মা যেন সত্যিকারের দূর্গা গুণসম্পন্ন হয়ে উঠতে পারে, তারা যেন তাদের স্বপ্নগুলো পূরণ করতে পারে ছেলেদের মতো, তা যেন প্রতিটা ভাই বাবা-মারা গুরুত্ব দিয়ে উপলব্দি করেন নিজের স্ত্রীকে, বোনকে, মাকে সামগ্রিক অর্থে একজন নারীকে পূর্ণ মর্যাদা সম্মান প্রদর্শণ করার শিক্ষা লাভ করতে না পারলে মাতৃ সাধনা বাঁদরের তামাশা ছাড়া আর কিছু নয় ভ্রষ্টাচারের নব সংযোজন লাভ জিহাদ সম্পর্কে আমরা প্রতি-প্রত্যেকে যেন সচেতন হই পারিবারিক আলোচনায় আমরা যেন আমাদের ভাই-বোনদের বিষয়ে সচেতন করি
আসুন, আমাদের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা পূর্বাপর আর্য্য ঋষিদের জাগিয়ে তুলি আমরা ঋষি ভরদ্বাজ, শান্ডিল্য, আলম্বায়ন, মৌদগৈল্য, কাশ্যপ ঋষির রক্তধারা যা আজো আমরা গোত্র-প্রবর নামে ধারণ করে আছি আমরাই একদিন পৃথিবীকে সত্য, ন্যায়, জ্ঞান-বিজ্ঞানের পথ দেখিয়েছিলাম আজ আমরা কোথায়? কোন পথে চলেছি? এখনও সময় আছে মিথ্যা জ্ঞানাভিমান ছুড়ে ফেলে দিয়ে বর্তমান যুগোপুরুষোত্তমে আশ্রয় নিয়ে আবার নিজেদের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করব আর্য্য সমাজ, মানবতার সমাজ যেই বানী একদিন ধ্বনিত হয়েছে বেদে, গীতায়, কোরাণে, বাইবেলে, ত্রিপিটকে, আজো সেই বাণী ধ্বণিত হচ্ছে 
আমরা আর্য্য সন্তানেরা হীনমণ্য নই, তাই সকলের জন্য প্রার্থনায় আমাদের কোন জড়তা নেই সবাই সুখী হোক, সত্য-সুন্দরের পথে চলুক, পরমপিতার কাছে শারদোৎসবে এই প্রার্থনা জয়গুরু, ন্দেপুরুষোত্তমম্
সমস্তা লোকা: সুখিনো ভবন্তু ।।

রিন্টু কুমার চৌধুরী (কম্পিউটার প্রকৌশলী)                                      
পরিচালক, শ্রেয় অন্বেষা

Post a Comment