- শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র || শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র পাবনা জেলার হিমায়েতপুর গ্রাম। পিতা শিবচন্দ্র চক্রবতর্ী ও মাতা মনোমোহনী দেবীর জগৎবরেণ্য সন্তান ৩০ ভাদ্র তাল নবমী তিথি ব্রাহ্মকালে নেড়ামাথা ওষ্ঠাধরে হাসিমাখা মুখে জন্মগ্রহণ করে। দিনে দিন যায়। শুভদিনে মা শিশুটির নামকরণ করেন- অ = অকুলে পড়িলে দীনহীন জনে নু = নুয়াইও শির কহিও কথা। কূ = কূল দিতে তারে সেধো প্রাণপণে ল = লক্ষ্য করি তার নাশিও ব্যথা। মূলত অনুকূল কোন নাম নয়। অনুকূল সমগ্র মানব সত্তার প্রত্যাশা। অনুকূল জীবন চাহিদা, বার্তাবরণ, সংহতি। অনুকূল শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিবিজ্ঞান ও শিল্পের প্রাণবন্ত সমাবেশ। অনুকূল জীবন ও বৃদ্ধি আন্দোলনের প্লাটফরম। অনুকূল প্রেম, ভালোবাসার মূর্ত বিগ্রহ। প্রথম প্রথম শ্রীশ্রী ঠাকুরের ইচ্ছায় দীক্ষাদি দিতেন জননী দেবী। ক্রমশ দীক্ষা গ্রহণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকায় শ্রী শ্রী ঠাকুর তার মনমতো কতগুলো লোককে তার পবিত্র পাঞ্জা অর্থাৎ দীক্ষাদানের অধিকার প্রদান করলেন। এরা শ্বেতবস্ত্র পরিহিত শ্বেতস্বরূপ। এদের নাম দিলেন ঋত্বিক। শ্রীশ্রী ঠাকুর বললেন, ঈশ্বর এক, ধর্ম এক, আর প্রেরিত পুরুষরা সেই একেরই বার্তাবাহী। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান- এগুলো ধর্ম নয় মত। জীবন বৃদ্ধিই ধর্ম। ধর্মের বিভেদ দূর করে সব মত ও সম্প্রদায়ের সমন্বয় বিধান করলেন। তারই পতাকাতলে অগণিত মানুষ মিলিত হতে লাগল। আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্সের মানুষ। গড়ে উঠল বিশ্বমিলনতীর্থ। বিশিষ্ট বিজ্ঞানী দিল্লির পারমাণবিক কেন্দ্রের সিভি রমনের সহকারী, স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য ঠাকুর দর্শন ও দীক্ষান্তে উক্তি করলেন, ঠাকুর বিজ্ঞানের অতলান্তিক মহাসমুদ্র, কোন কূল পেলাম না। এসময় শ্রীশ্রী ঠাকুর ঋত্বিক অ্যাডভাইজরি বোর্ড গঠন করেন এবং কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্যকে ঋত্বিকাচার্য ও সৎসঙ্গের প্রেসিডেন্ট করেন। এরপরই প্রবলভাবে শুরু হল সাধারণ নর-নারীর দুঃখ-বেদনার সমাধান, প্রশ্ন-উত্তর, তথা যথাস্থানে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ। ১৯৪৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর পাবনা থেকে রওনা হয়ে ২ সেপ্টেম্বর বিহারের দেওঘরে চলে এলেন। শ্রীশ্রী বড়দার ব্যবস্থাপনায় বড়াল বাংলোতে উঠলেন। ক্রমে দেওঘর বৈদ্যনাথের বুকে গড়ে উঠল দেওঘর সৎসঙ্গ আশ্রম নামের বিরাট সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। সব কাজ শেষ। আশিতে হইবে শেষ। তাল নবমী তিথিতে তিনি আবিভর্ূত হয়েছিলেন। আর ১৯৬৯ সালের ২৭ জানুয়ারি শুক্লা নবমী তিথির ব্রাহ্মমুহূর্ত ১২ মাঘ পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র ভাবগত লীলা সংবরণ করে মহাপ্রয়াণ করলেন। অনন্তের পথে অনন্তলোকে/ওগো প্রভু আমার/তুমি মাতা তুমি পিতা/তুমি বন্ধু তুমি সখা/তুমি বিদ্যা তুমি ধন/সর্বং তুমি দেব জন মন। ধীরেন্দ্র শেখর শীল শর্মা, ঢাকা "
Post a Comment